মনিরুজ্জামান প্রমউখ’ এর তিন কবিতা- অমরত্ব-ফল, স্বাধীনতা’র প্রান্তিক অনুকম্পন, পথে’র নকশা

অমরত্ব-ফল
—————————
পেন্সিলে’র দাগ- রাবারে মুছে ফেলতে পারো ।
কিন্তু- যা লেখা হয়, তা না মুছতে পারে,
লেখক তার- হৃদয় হতে ।
না মুছতে পারে, পাঠক তার-পাঠ-ক্রিয়া’র
হৃদয় অনুভব-অনুশীলন হতে ।
হৃদয় হতে উৎসারিত সব- শব্দে’র ভবিষ্যৎ
পেন্সিলে’র গর্ভ হতে’ই আসে ।

মানুষ অতীত মনে রাখুক, বা- না রাখুক,
পেন্সিল তার- অতীত লিখে রাখে, ভবিষ্যতে’র পৃষ্ঠায় ।
পেন্সিলে’র ইতি ঘটে ।
কিন্তু- ছাপে’র ইতি ঘটে-না ।
ছাপে স্মৃতি বাড়ে ।
স্মৃতি ধ্যান বৃদ্ধি করে ।
ধ্যান লিখনি-শক্তি সমৃদ্ধ করে ।
সমৃদ্ধি মানুষ-কে ঐতিহাসিক করে ।
পেন্সিল তার নিঃশেষে- মানবে’র অমরত্ব লিখে ।
উৎসর্গ সব অঙ্কে, ইতিহাসে’র পৃষ্ঠা- রচনা করে ।
করা দিয়ে’ই যেহেতু কর্ম-ফল ।
উৎসর্গ দিয়ে’ই অমরত্ব-ফল ।।
——————-

স্বাধীনতা’র প্রান্তিক অনুকম্পন
————————————————–
শুক্লা-ক্রান্তি’র কাছে, ঋণী নই,
কিংবা- একাদশী’র কাছে ।
পাল-তোলা নৌকা-গুলো যেমন-
দিক নির্ণয়ে’র মৌসুম খোঁজে ।
আমিও ভরাডুবি’র কাছে,
নেতিয়ে দেই-নি, ভোরে জেগে ওঠা’র শ্বাস ।

মে মাসে’র ঘাম ঝরা- বিকেলেও বপি-
প্রাতে’র কমনীয় আশ্বাস ।
জীবনানন্দ ফুল-গুলোয়,
পাখী-গুলোয়,
নদী-গুলোয়
ঠাঁই দেখতেন- বেশী ।
আমি বে-মালুম স্মৃতি’র অ-গোচরে,
পুঁতে রেখেছি, সে-সব !

কাল-কিনি, আজ-কিনি’র মধ্যে-
নিনাদ করি-না, সরব ।
শ্বাসে’র সাথে- বল-প্রেম যোগ করে,
উড়িয়ে দেওয়া- সংক্রমণ আমার ।।
———————

পথে’র নকশা
——————————
পৃথিবী’র বুক ফেড়ে, তুলে আনে, সময়ে’র সক্ষম দাবি- ইনসান ।
মিটে-না, জুটে-না, পথে’র সারি ।
সম্মিলিতে’র কাছে, একক’- এর কী- দুর্দশা !

দেখেছে, সমাজ অধিপতি ।
দেখেছে, পথে’র নুরি ।
দেখেছে, ভাবে’র বুড়ি ।

যুগে’র কালসিটে দাগ- মুছে দেয়া’র প্র-বক্তা কোথায় ?
কোন জামানায়- তার ভ্রুণ পোতা ?
জানো কী- কেউ ?

জীবনে’র সুদ নিয়ে, যে- রসদ ?
সে- রসদে, মন পুড়ে, ছাই হলে’ই কী- মিলে যাবে, সু-বোধ পথে’র নকশা ?
কলম্বাসে’র আমেরিকা কী- তার জীবন-দায়ী হতে পেরেছে ??

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!