খান আতা’ই নন, আরও নাম রয়েছে সেই তালিকায়।

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

মুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুকে নিয়ে গত দুদিন ধরেই বেশ হৈ-চৈ চলছে। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি সাংস্কৃতিক অভিবাসী সমাবেশে, আমাদের দেশের প্রয়াত চিত্রপরিচালক ও অভিনেতা খান আতাউর রহমানকে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করেছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের অনেকেই। চিত্রনায়ক ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুকও এক প্রকার কৈফিয়তই চেয়েছেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর কাছে।

এরই মধ্যে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে খান আতাউর রহমান প্রসঙ্গে একটি পোস্ট দেন- তৎকালীন যে ৫৫ জন বুদ্ধিজীবী ও শিল্পী ১৯৭১-এর ১৭ মে মুক্তিযুদ্ধকে ‘আওয়ামীলীগের চরমপন্থীদের কাজ’ বলে নিন্দাসূচক বিবৃতি দিয়েছিলেন, খান আতাউর রহমান তার ৯ নম্বর সাক্ষরদাতা ছিলেন।

নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু তার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে রেফারেন্স হিসেবে লিখেছেন- ‘১৭মে ১৯৭১ দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকা দ্রষ্টব্য’। এছাড়াও তিনি একটি বইয়ের দুটি পাতা ছবি আকারে যুক্ত করেছেন তার পোস্টে। সেখানে বেশ কয়েকজনের নাম দেখা গিয়েছে।

book‘একাত্তরের দালাল ও ঘাতকেরা কে কোথায়’। ইন্টারনেটে ই-বুক আকারে প্রকাশিত বইটির ১৪২ থেকে ১৪৫ পাতা পর্যন্ত লেখা রয়েছে পুরো বিষয়টি এবং উক্ত ৫৫ জনের পেশাসহ নাম। ৫৫ জন বুদ্ধিজীবীর বিবৃতি নামের শিরোনামে একটি লেখা থেকে পাওয়া উক্ত ৫৫ জনের নাম জানতে এবং উক্ত বইয়ের ঐ অংশটি পড়তে এখানে ক্লিক করতে পারেন।

নামের ক্রমানুসারে ২ নম্বরে নাম দেখা যাচ্ছে- প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ’র। তিনি তৎকালীন একজন নাট্যকার ছিলেন। ৬ নং নাম- নূরুল মোমেনের। তিনিও নাট্যকার। ৯ নং এ- খান আতাউর রহমান।

গায়ক-গায়িকা ছিলেন ১০নং শাহনাজ বেগম(গায়িকা), ১২নং ফরিদা ইয়াসমিন(গায়িকা), ১৩নং আব্দুল আলীম(পল্লী গায়ক), ১৯নং খোন্দকার ফারূখ আহমেদ(গায়ক), ২০নং এস এ হাদি(গায়ক), ২১নং নীনা হামিদ(গায়িকা), ২২নং এম এ হামিদ(গায়ক), ২৩)লায়লা আঞ্জুমান্দ বানু(গায়িকা), ২৬নং সাবিনা ইয়াসমিন(গায়িকা), ২৭নং ফেরদৌসি রহমান(গায়িকা), ২৮নং মোস্তফা জামান আব্বাসী(গায়ক), ৫৪নং ফওজিয়া খান(গায়িকা), ৫৫নং লতিফা চৌধুরী(গায়িকা)।

পরিচালক, চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন ১৪নং আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম(চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক), ১৫নং এ এইচ চৌধুরী(পরিচালক ও প্রযোজক), ৩৯নং ফতে লোহানী(চিত্র পরিচালক ও অভিনেতা)।

নাট্যকার ছিলেন ১৭নং মুনীর চৌধুরী(নাট্যকার), ৩৫নং ফররূখ শীয়র(নাট্যকার), ৪২নং মবজলুল হোসেন(নাট্যকার)।

শিল্পী ও নাট্যশিল্পী ছিলেন ২৫নং বেদার উদ্দিন আহমেদ(শিল্পী), ৪৭নং আলী মনসুর(নাট্যশিল্পী)।

অন্যান্য যাদের নাম রয়েছে, তাঁরা সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বাইরের কিংবা পরোক্ষভাবে বিনোদনের সঙ্গে জড়িত। এই মিলে মোট ৫৫ জন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন,  কিন্তু পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন পাকিস্তানি জান্তাদের পক্ষে বিবৃতিতে সাক্ষর করতে। তবে তাদের অনেকেরই সন্তান ও পরিবার পরিজন মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। মুনীর চৌধুরী নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু তাঁর সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এবং তাঁদের সারাজীবনের কার্যকলাপে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেই অবস্থান করতে দেখা গিয়েছে। গায়িকা শাহনাজ রহমতুল্লাহ, যার ছোট ভাই জাফর ইকবাল মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

তাই অনেকেরই প্রশ্ন এখন, খান আতাকে যদি নাসির উদ্দিন ইউসুফ ‘রাজাকার’ বলেন তাহলে তালিকার বাকিদের তিনি কি বলবেন?

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!