গোপালপুর প্রতিহিংসায় মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ

মো. সেলিম হোসেন, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি পূর্ববর্তী তালিকায় নাম থাকা স্বত্বেও প্রেরিত তালিকা থেকে প্রতিহিংসাবশতঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান, নির্মাণাধীন বিশ্বখ্যাত ২০১ গম্বুজ মসজিদের নির্মাতা, জনতা ব্যাংক গণতান্ত্রিক কর্মচারি ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ফেডারেশন এর সভাপতি (সিবিএ) এবং জাতীয় শ্রমিকলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম এর নাম বাদ দিয়ে জামুকায় প্রেরণ করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দেশপ্রেমিক সকল মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীর নিকট একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সুদীর্ঘ কর্মজীবনে অর্জিত মান সম্মান নষ্ট করার কারণে উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির হঠকারী ও মনগড়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তিনি এর সঠিক ও ন্যায় বিচার দাবি করে সকলের নিকট সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধার নিকট ন্যায়বিচার ও প্রতিবাদ করার জন্য একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার লিখিত খোলা চিঠিতে তিনি জানান, ‘আমি আপনাদের সকলের মত দেশ ও জাতির প্রয়োজনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে বাংলার স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে আপনাদের সঙ্গ্ েনিয়ে দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সনে ১২ই জানুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশক্রমে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে জনতা ব্যাংকে আমাকে চাকুরীতে নিয়োগ করা হয়।
এ যাবৎ কাল দেশের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে নিজের মান সম্মান বজায় রেখে বেঁচে আছি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়ন করে যখন জাতির শেষ্ঠ সন্তানদের সম্মানী ভাতা চালু করা হয় তখন আমিও একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তালিকানুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় সুবিধা গ্রহণ করে আসছি।
আমার গেজেট নং-৬১৫৩, সনদ নং-ম-১৩১২১৬, তাং ২২/০৬/২০০৯ ইং । জাতীয় তালিকা ক্র ঃ নং-২৯৮ (গোপালপুর উপজেলা)। ১৯৯৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক প্রণীত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভোটার সূচক নং-৯৩-৩৮-৯৪-০২০ (গোপালপুর উপজেলা) । মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতার ফরম নং-০২ বই নং-৩২৮ থাকা স্বত্বেও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি যাচাই বাছাই সম্পন্ন করার সময় অসৎ উদ্দেশ্যে প্রনোদিত হয়ে পূর্ববর্তী তালিকায় (মোঃ রফিকুল ইসলাম) আমার নাম থাকা স্বত্বেও প্রেরিত তালিকা থেকে প্রতিহিংসাবশতঃ আমার নাম (মোঃ রফিকুল ইসলাম) বাদ দিয়ে জামুকায় প্রেরণ করেন।
আমার সারা জীবনের কষ্টার্জিত মান সম্মান ও সামাজিক সুনাম ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে আমার নাম উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও বিষ্মিত হয়েছি। আমি এ ধরনের অযৌক্তিক ও প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার স্বপক্ষে যাবতীয় দলিলাদি সকল দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীর সামনে উপস্থাপন করছি ঃ (ক) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট পৃষ্ঠা ও তারিখ ঃ- ৮১৪০, আগষ্ট/১১,২০১০ ইং গেজেট নং ৬১৫৩। (খ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রণীত সাময়িক সনদ ম-১৩১২১৬, তাং-২২/০৬/২০০৯ ইং। (গ) মুক্তিযোদ্ধাগণের জাতীয় তালিকা ক্র ঃ নং ঃ ৩২৪, গোপালপুর উপজেলা, টাঙ্গাইল। (ঘ) বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক প্রণীত ভোটার তালিকা নং ৯৩-৩৮-৯৪-০২০ (গোপালপুর উপজেলা)। (ঙ) বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রত্যয়নপত্র। (চ) অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্তৃক যাচাই বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রত্যয়নপত্র তাং-১৬/০৮/১১ইং (ছ) জনতা ব্যাংক লিমিটেড কর্তৃক যাচাই বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রত্যয়নপত্র তাং-২৮/০৯/১১ইং (জ) যুদ্ধকালীন সময়ের সহযোদ্ধাগণের প্রত্যয়নপত্র। (ঝ) মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে যুদ্ধকালীন সময়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। (ঞ) ১৯৭৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে হত্যার ষড়যন্ত্র (দৈনিক গ্রেনেড প্রত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ) তারিখ ২৮/০৪/১৯৭৪ ইং। (ট) যাচাই বাছাই পূর্বক প্রকৃত বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসাবে “বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাষ্ট” সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা কর্তৃক অনুমোদন (নিবন্ধন নং এস-১২১৫৯, তারিখ ২৪/০৬/২০১৫ ইং) (ঠ) যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে রণাঙ্গনের কয়েকটি ছবি। যে ছবিগুলো বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম কর্তৃক সত্যায়িত।
অতএব, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসাবে আমার সুদীর্ঘ কর্ম জীবনে অর্জিত মান সম্মান নষ্ট করার কারণে উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির হঠকারী ও মনগড়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সভাপতির বিচার দাবি করছি। এ ব্যাপারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, দেশপ্রেমিক সকল মুক্তিযোদ্ধা ও দেশবাসীর নিকট সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’


  • কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!