গোলপাতা

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

গোলগাছই গোলপাতা হিসেবে পরিচিত। নামে গোল হলেও এই পাতা মোটেও গোল নয়, বরং নারকেল বা খেজুরগাছের মতো লম্বা। গোলপাতা Arecaceae গোত্রের পামজাতীয় উদ্ভিদ প্রজাতির। এর বৈজ্ঞানিক নাম Nypa fruticans. এটি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ।

গোলপাতা বাংলাদেশসহ মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, পপুয়া নিউগিনি, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশের ম্যানগ্রোভ বনে ও উপকূলীয় অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ জন্মে। কাণ্ড খাটো, অনুভূমিক এবং এতে অজস্র শিকড় আছে। পাতা ৩ থেকে ৯ মিটার লম্বা। গোলপাতা সুন্দরবনে স্বল্প ও মধ্যম লবণাক্ত অঞ্চলে জন্মে।

গোলপাতা দিয়ে একসময় উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজন ঘরের ছাউনি দিত। এ পাতার ছাউনি নির্মিত ঘরে গরমের সময় ঠাণ্ডা আর শীতের সময় গরম ভাব অনুভূত হয়। গোলপাতার ছাউনি চার-পাঁচ বছর টেকসই হয়। ঘরের ছাউনি ছাড়াও রান্নার জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়।

তা ছাড়া গোলগাছের পাতার ভেতর থেকে মোচা আকারে ফুল বের হয়। ফুল থেকে দৃষ্টিনন্দন ফল হয়। ধীরে ধীরে তালের কাঁদির মতো বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলটি পরিপক্ব হলে এর ভেতরের অংশের স্বাদ অনেকটাই কাঠবাদামের মতো হয়।

খেজুরগাছের মতো গোলগাছের রস থেকে  গুড় তৈরি করা যায়।

গোলপাতার গুড় বাংলাদেশের পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নে তৈরি করা হয়। গোলগাছের রস খেজুরগাছের রসের মতো সকাল ও সন্ধ্যায় আহরণ করে জ্বাল দিয়ে শুকিয়ে ঝোলা গুড় তৈরি করা হয়। স্বাদের গুণগত ভিন্নতার কারণে গোলপাতার গুড়কে খেজুর ও তালের গুড় থেকে সহজে আলাদা করা যায়।

গোলগাছের পাতা, ফল ও মূল ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই গাছের ফল খেলে চর্মরোগে উপকার পাওয়া যায়। শিকড় সিদ্ধ করে সকাল-বিকাল খেলে আমশয় ভালো হয়। এ ছাড়া এই শিকড় খেলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়। বাতের ব্যথায় গোলগাছের পাতা বেটে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়। মুখে অরুচি ভাব দেখা দিলে এই গাছের ফল খেলে উপকার পাওয়া যায়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!