দুর্নীতির মহারাজ সুভাস চন্দ্র এসপির অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি টাকা!

 

 

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানজনক পিপিএম (প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল) পদকপ্রাপ্ত সুভাস চন্দ্র সাহার তিন ব্যাংকে অবৈধভাবে উপার্জিত ৮ কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাওয়ার ঘটনায় ফরিদপুরের এসপি সুভাস চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করেছে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী রীনা চৌধুরীর যৌথ নামে আট কোটি ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৭ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। এই টাকা ওয়ান ব্যাংকের রাজধানীর বংশাল শাখা ও এলিফ্যান্ট রোড শাখা এবং যশোরের ওয়ান ব্যাংক শাখায় গচ্ছিত ছিল। কিন্তু পুলিশ সুপার ওই অর্থ দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী কিংবা আয়কর নথিতে উপস্থাপন না করে গোপন রেখেছে। এমনকি দুদকের অনুসন্ধানেও ওই আয়ের যথাযথ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আসুন সুভাষের দুর্নীতির ফিরিস্তি পড়ি ফরিদপুরের লোকাল পোর্টাল ফরিদপুর টাইমসে-
পুলিশ সুপার হিসেবে যোগ দেয়ার পর তার প্রতি ফরিদপুরের অন্যান্য পুলিশ অফিসার থেকে মাদক ব্যবসায়ী সবার মাঝেই অসন্তোষ সৃষ্টি হয় স্বার্থগত দ্বন্দ্বে। পুলিশের অধিনস্ত এসব কর্মকর্তাদের অভিযোগ, এই স্যারের রেট বেশি। তিনি একাই সব খেতে চান। এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সুভাস সম্পর্কে বলে, ‘এই এসপি ৬ মাস থাকলে টাকা পয়সা সব চুইষ্যা নিবে ফরিদপুরের। মধুখালীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খবর সংগ্রহে যেয়ে দেখা হওয়া এক তরুন পুলিশ অফিসার খুব আক্ষেপের সাথেই কথাগুলো বলছিলেন। তিনিই প্রথম জানান, ফরিদপুরে ওসিদের বদলী, কর্মস্থল নির্ধারণ ইত্যাদি খাতে আগে যেখানে ৫০ হাজার টাকা লাগতো এখন সেখানে ৮০ হাজার টাকা লাগে। প্রত্যেক থানার ওসিকে ডেকে মাসিক টাকা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। কেউ নির্ধারিত টাকা দিতে না পারলে তাতে গুরুত্বহীন স্থানে বদলী করা হতো। তার সময়ে কতিপয় ওসি একারণে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। চিহ্নিত আবাসিক হোটেলগুলো মিনি পতিতালয়ে পরিণত হয়। পুলিশ নিজে অপরাধ করেনা। অপরাধীদের থেকে মুনাফা নেয় দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ক্ষুব্ধ ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এসপির বাসার বাজার যেতো রথখোলা পতিতা পল্লীর টাকায়। এসপির বাজার মানে বুঝেন? তরুন পুলিশ অফিসার প্রশ্ন করে নিজেই উত্তর দেন- ধরেন গাড়িতে যাওয়ার পথে এসপির ছেলের একটা মোবাইল বা টিভি পছন্দ হলো। বলা মাত্রই সেটি বাসায় পৌছে যাবে ওই খরচে। মাদক ব্যবসা ছাড়াও ফরিদপুরের দু’টি যৌনপল্লীকে ঘিরে শিশু ও কিশোরী পাচারের রমরমা ব্যবসা পুলিশের বড় কামাই। এখানে অনেক ধরনের অপরাধীর মিলন মেলে।

ফরিদপুরে যোগদানের পর ১৫ দিনের মধ্যে সুভাস মাদক নির্মুলের ঘোষনা দেয়। কিন্তু বাস্তবতা উল্টো, মাদকের বিস্তার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। এসপিকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে মাদক ব্যবসা চালাতো বলে জানা যায়।

তাঁর সময়ের আরো অভিযোগ, এসপির দ্বায়িত্বভার গ্রহণের পর ফরিদপুরে ব্যাপকহারে বেড়ে যায় ডাকাতির ঘটনা। নানা ধরনের ডাকাতি হয়। মহাসড়কে ১৫ মিনিটের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক বাসে ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ছিলো রহস্যজনক। জেলার বিভিন্ন প্রান্তেই ডাকাতি লুটতরাজ বেড়ে যায়। খুনখারাবি ধর্ষণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে কিশোরী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছেই। বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে মানুষের লাশ। নিরাপত্তাহীন মানুষ ধর্ষণ ও হত্যাসহ নানা অপরাধের বিচার ও প্রতিকার চেয়ে একের পর এক মানববন্ধন করছে। অপহরণ ও জিম্মি ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো জড়িতদের সাথে সখ্যতার অভিযোগ আছে। ডাকাত সাজিয়ে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মানুষ মারার ঘটনাও ঘটেছে সুভাসের অধীনে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!