নাগরপুরে ধর্ষিতাকে দেহ ও মাদক ব্যবসায়ী প্রমানের চেষ্টা

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ধর্ষিতাকে দেহ ব্যবসায়ী ও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দেয়াসহ তথ্য লোপাট, প্রতারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, মানহানী ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম ও ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

মামলার অপর আসামীরা হলেন, নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম রঙ্গু, ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহাবুল আলম দুলাল, ধুবড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান শাকিল।

নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া গ্রামের সাহাবুদ্দিন গত ১৯ নভেম্বর টাঙ্গাইলের নাগরপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর এর মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১২ জুলাই ২০১৮ সারটিয়াগাজি গ্রামের জবেদার এর ছেলে জুয়েল এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনার পর ছাত্রীর বাবা নাগরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের সাথে তার বাড়িতে দেখা করে এর প্রতিকার চান। কারণ উইলিয়াম খুবই প্রভাবশালী, ধর্ষক জুয়েল তার কর্মচারি ও অন্যান্য সহযোগীরা তার কাছের লোক। তিনি প্রতিকার করবেন তো দূরের কথা উল্টো ছাত্রীর বাবাকে বলে দেন, এরকম ঘটনা হয়েই থাকে। তুমি এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করিও না, করলে সুবিধা করতে পারবে না।

উইলিয়ামের প্রভাবেই নাগরপুর থানা পুলিশ ধর্ষণের মামলা গ্রহণ করেননি। নিরুপায় হয়ে কলেজ ছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল টাঙ্গাইল আদালতে মামলা করেন। পরে মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামিরা বাদীকে একের পর এক হুমকি দিয়ে আসে।

এদিকে আসামীদের মামলা থেকে নির্দোষ প্রমান করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা পরস্পর যোগসাজসে ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার প্যাডে ধর্ষনের বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে উল্টো ধর্ষিতাকে দেহ ব্যবসায়ী ও মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে আসামীদের পক্ষে আদালতে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। হ্যান্ডবিল ও পোষ্টার ছাপিয়ে বিলি করে।

এছাড়াও ধর্ষক জুয়েল রানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়ামের কর্মচারী ও অনুসারী হওয়ায় তাকে মামলা থেকে রেহাই দিতে ধর্ষিতার পরিবারকে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে বাদিকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামীদের বিরুদ্ধে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকিরুল ইসলাম উইলিয়াম বলেন, সমাজে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!