ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি ৮ম বারের মতো পেছালো

 

 

 

আইনআদালত ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামী এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে আদালতে উপস্থিত না করায় চার্জ গঠনের (অভিযোগ গঠন) তারিখ আবারও পেছালো। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো চার্জ গঠনের তারিখ পেছালো। বুধবার (১৯ জুলাই) আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের দিন ধার্য্য ছিল।
এ হত্যা মামলার আসামী ঘাটাইল-৩ আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে এবং মোহাম্মদ সমীর টাঙ্গাইল কারাগারে অসুস্থ হওয়ার কারণে টাঙ্গাইল আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি বলে তাদের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন। এছাড়া মামলায় জামিনে থাকা তিন আসামী এবং হাজতী দুই আসামীর জন্য হাজিরা দাখিল করা হয়।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত প্রথম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া আসামীদের বিরুদ্ধে আগামী (৬ সেপ্টেম্বর) তারিখে অভিযোগ গঠনের পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন। সেই সাথে আগামী তারিখে এমপি রানাকে আদালতে উপস্থিত হতে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে এমপি রানাসহ অন্যান্য আসামীদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবিতে টাঙ্গাইল আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, যুগ্ম সম্পাদক ও মামলার বাদি নাহার আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনিসহ শহর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ টাঙ্গাইল আদালতকে জানায়, এমপি রানা অসুস্থ থাকায় তাকে হাজির করা যায়নি। তিনি পাইলস রোগে ভুগছেন। এ কারণে তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি। এর আগে ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ও ৯ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৫ মার্চ, ২৮ এপ্রিল ও ১২ জুন তাকে আদালতে হাজির করতে না পারায় এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ আবারও পেছানো হলো।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম খান জানান, দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি আমানুর রহমান খান রানা গত ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আছেন। বেশকয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিন্ম আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি। এ মামলায় ১৪ জন আসামীর মধ্যে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন আমানুর রহমান খান রানা এমপি, আনিসুর ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ সমীর। এছাড়া এই মামলায় জামিনে রয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাসির উদ্দিন নুরু ও ফরিদ আহমেদ।
বর্তমানে এই মামলায় আত্মগোপনে রয়েছে এমপি আমানুর রহমান খান রানার ছোট ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, এমপি রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কবির হোসেন, এমপি রানার দারোয়ান দাঁত ভাঙা বাবু, সাবেক যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন চাঁন, ছানোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর বাসার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। পরে এমপি রানা ও তার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!