বাড়ছে বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল

  

অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

সেতু বিভাগের আওতাধীন বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল বিদ্যমান হারের চেয়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। যানবাহন চলাচলের উপর টোল বসিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন সেতুর টোল হার নির্ধারন/পুন:নির্ধারনের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী সেতু কর্তৃপক্ষের আয়-ব্যয়, ট্রাফিক পূর্বাভাস, সেতু পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, ভবিষ্যতে পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী ট্যানেলের অর্থ পরিশোধ, ডিএসএল পরিশোধ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা নিয়ে এ টোলহার বাড়ানো হচ্ছে বলে অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সেতুর টোল বাড়াতে সেতু কর্তৃপক্ষ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে টোল আদায়ে বসানো হয়েছে নতুন সফটওয়্যার। যানবাহনের ধরনভেদে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত টোল বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর আগে দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টোলের নতুন হারের প্রস্তাব পাঠানো হয় অর্থ বিভাগে। অর্থবিভাগের সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন অর্থমন্ত্রীর জন্য একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করলে তিনি সম্প্রতি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। ৫ বছরের ব্যবধানে টোলের হার বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে টোল বাড়ায় সরকার।

অন্যদিকে সিএনএসের মাধ্যমে বিআরটিএ-এর সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত সফটওয়্যারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ১ মাসের জন্য এ সফটওয়্যার বসিয়েছে অপারেটর সিএনএস। আগে দৈনিক টোল আদায় হতো গড়ে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। এখন আদায় হচ্ছে গড়ে ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ একদিকে সফটওয়্যার স্থাপন অন্যদিকে টোলের নতুন হার নির্ধারণ- এ দুই উপায়ে বাড়ানো হচ্ছে টোল আদায়ের পরিমাণ।

সূত্র জানায়, গত ১২ মার্চ থেকে পরীক্ষামূলক সফটওয়্যার কার্যক্রম চালুর পর টোল আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়ে দ্বৈত মত দেখা দিয়েছে। আগে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন কার্ডের (ব্লুবুক) বিবরণ অনুযায়ী টোল আদায় করত সেতু কর্তৃপক্ষ। এখন বিআরটিএ-এর সার্ভারের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় গাড়ির এক্সেল ও আকার অনুযায়ী টোল ধার্য করা হচ্ছে। অবশ্য এতে টোল আদায়ের হার বেশি হচ্ছে। গত ১-১১ মার্চ পর্যন্ত আগের সফটওয়্যারে টোল আদায় হয়েছে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫২০ টাকা। ১২ মার্চ টোল আদায় হয় ১ কোটি ২৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩০ টাকা। ১৩ মার্চে এর পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা। ১৪ মার্চে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮৩০ টাকা।

এদিকে বাজেট ভর্তুকি এড়ানোসহ নানা খাতে ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষায় টোল বাড়ানোর প্রস্তাব করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। টোল বাড়ানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করতে গঠন করা হয় ৮ সদস্যের কমিটি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে টোল বাড়ানোর পক্ষে অভিমত দেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধু সেতুতে ধার্য্যকৃত টোলের নতুন হার অনুযায়ী মোটর সাইকেলের বিদ্যমান টোল ৪০ টাকার জায়গায় দিতে হবে ৫৫ টাকা। হালকা যানবাহনে (কার, জিপ, মাইক্রো, পিকআপ ইত্যাদি) ৫০০ টাকার জায়গায় ৭০০ টাকা (৪০ শতাংশ)। ছোট বাসের ক্ষেত্রে (৩১ আসন বা তার কম) ৬৫০ টাকার পরিবর্তে ৯০০ টাকা আর বড় বাসে (৩২ বা তার বেশি আসন) ৯০০ টাকার জায়গায় ১২৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ছোট ট্রাক (৫ টনের কম) ৮৫০ টাকার পরিবর্তে ধরা হয়েছে ১২০০ টাকা। মাঝারি ট্রাক (৫ টন থেকে ৮ টন) হলে ১১০০ টাকার পরিবর্তে ১৫৫০, বড় ট্রাক (৮ টনের বেশি) হলে ১৪০০ টাকার স্থলে ২০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রেইলারের জন্য (৪ এক্সেল পর্যন্ত) ৪০০০ টাকা এবং ৪ এক্সেলের বেশি হলে ৪০০০ টাকার সঙ্গে যোগ হবে এক্সেল প্রতি ১৫০০ টাকা।

সূত্র : রাইজিংবিডি.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!