রূপা তুমি নও শুধু ধর্ষিতা আমাদের বাংলাদেশ

 

 

রূপা তুমি নও শুধু ধর্ষিতা আমাদের বাংলাদেশ
রণেশ মৈত্র
সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ

রূপার চোখে কতই না স্বপ্ন ছিল। শিক্ষক হবে, আইনজীবী হবে, শেষে হয়তো বা বিচারকও। হ্যাঁ, তেমনটা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। কারণ রূপা মেধাবী ভাল ছাত্রী, চমৎকার নির্দোষ চেহারা ও নির্মল, পবিত্র চরিত্রের অধিকারী। তার পরিচিত সমাজ তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ এমন খবরও পত্রিকায় পড়লাম।
রূপাকে ধর্ষণ-গণধর্ষণ করেই ধর্ষকেরা ক্ষান্ত হয় নি। ধর্ষিতা রূপাকে তারা আরও বেশী ভয় করেছিলো। এতটাই যে ঐ ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তারা অকল্পনীয় নির্মম পন্থায় মেরে ফেললো। আমরা, আমাদের দেশ, রূপার মা, বোন আত্মীয়-স্বজন – তার সহপাঠিরা কেউই আর তার জীবন্ত মূর্তি দেখার সুযোগ পাবে না। রূপা তার সাহসিকা মূর্তি নিয়ে আজ পরপারে। নীরবে, নিভৃতে, এবং হয়তো বা সমাজের প্রতি ঘৃণারবোধ নিয়ে সেই অজানা অচেনা বিশ্বে বাস করতেও শুরু করেছে।
হ্যাঁ, আমরা ঘৃণার পাত্র। আমরা আমাদের কাজে প্রতিনিয়ত তার পরিচয় দিচ্ছি। একজন রূপা না কি? কত শত সহ¯্র রূপা বাংলাদেশে ধর্ষিতা হচ্ছে প্রতিদিন-নিত্যদিন। আর ধর্ষিতার সংখ্যা যেন প্রতি মাসে বেড়েই চলেছে।
এই তো সেদিন ২৬ আগষ্ট, ২০১৭ প্রতিশীল দৈনিক সংবাদ এবং প্রথম পৃষ্ঠায় তিন কলাম শিরোনামে প্রকাশিত খবরে দেখছি, জানুয়ারী থেকে আগষ্ট পর্য্যন্ত আটমাসে সারা দেশে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে ১৯৪৪ টি। খবর পুলিশ সূত্রের। এর মধ্যে লিপ্ত ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৫২ টি।
২০১৬ সালে প্রতি মাস গড়ে সারা দেশে ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৩১০ টি। ২০১৭ সালের আট মাসে মামলা হয়েছে ১৯৪৪ টি। এ হিসাবে ধর্ষণের মামলার সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। জানা গেছে, চলতি বছরে জানুয়ারীতে শিশু ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৪১ টি ফেব্রুয়ারীতে ৫০ টি, মার্চে ৫৩ টি, এপ্রিলে ৫৬ টি, মে মাসে ৭৭ টি, জুনে ৪৩ টি, জুলাই মাসে ৩২ টি এবং আগষ্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্য্যন্ত ৩০ টি।
অথচ ২০১৬ সালের জুলাই পর্য্যন্তে মামলা হয় ৩৪৬ টি ঐ বছর মোট মামলা হয় ৬০১ টি। ২০১৫ সালে ৫২১ টি, ২০১৪ সালে ১৯৯টি, ২০১৩ সালে ১৭০টি এবং ২০১২ সালে ৮৬টি। বৃদ্ধির হার ভায়াবহ। প্রতি বছরই যেন ধর্ষণ চিত্র অনেক গুনে বেশী বেশী আতংকজন হয়ে উঠছে।
সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্য্যালোচনা সভায় সারা দেশের অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে নারী নির্য্যাতন ও শিশু ধর্ষণ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে দেখা গেছে গত জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্য্যন্ত তিন মাসে ময়মনসিংহ, বরগুনা, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, গাজীপুর, রংপুর ও নীলফামারি জেলায় সবচেয়ে বেশী সংখ্যায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ৩৩টি, বরগুনায় ৩০টি সিরাজগঞ্জে ২৬টি, গাইবান্ধায় ২৬টি গাজীপুরে ২৫ টি, রংপুরে ২১ টি এবং নীলফামারীতে ২১ টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড করা হয়।
সাম্প্রতিক নির্য্যাতন ও ধর্ষকের কয়েকটি আলোচিত ঘটনার মধ্যে উল্লেখিত হয় ২০ শে আগষ্ট রাজধানীতে সহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা। এর আগে ওই দিন রাত সাড়ে ১০ টায় ধর্ষণের অভিযোগে শাহজাহানপুর থানার সহকর্মী নারী পুলিশ কনস্টেবল।
গত ১৮ আগষ্ট বরগুনার বেতাগ্যীতে স্বামীকে আটকে রেখে শ্রেণী কক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকাকে গণধর্ষণ করার খবর সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। শিক্ষিকা একটি মামলাও দায়ের করেছেন গত ১৭ আগষ্ট রাজধানীর পল্লবীতে এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের অভিযোগে তিতুমীর কলেজের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ আবার একই দিনে এক টেলিভিশন চ্যানেলের একজন ঘোষিকাকে ধর্ষণ করা হয়।
গত ১০ আগষ্ট মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক শিশুকে আম গাছে ঝুলিয়ে নির্য্যাতন করা হয় অমানুষিকতাভাবে।
গত ৭ আগষ্ট রাজধানীর দক্ষিণ খান আশকোনা এলাকার বাসায় ঢুকে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া যায়। বাক প্রতিবন্ধী ঐ শিশুকে তার আপন ফুফা ধর্ষণ করেছিল বলে পরে জানা যায়। মেয়েটি অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়ায় ঘটনা প্রকাশ পায়।
এর আগে রাজধানীর বাড্ডা থানার গত ৩১ জুলাই আনন্দনগরে তিন বছর বয়সী শিশু তানহাকে পাশবিক নির্য্যাতন করে পরে স্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। শিপন নামে এক যুবক ছিল ধর্ষক তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নারী শিশুদের দৈহিক ও যৌন নিরাপত্তা হীনতা বাংলাদেশে আজ এক চরম পর্য্যায়ে পৌঁছেছে। কি রাস্তায় কি নদীর তীরে, কি স্কুলে, কি কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে, কি বাসে, ট্রেনে এবং এমন কি নৌকা যাত্রায়ও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই। নিরাপত্তা নেই এমন কি নিজ বাড়ীতেও। ফুফা-চাচা-বাবাও যদি ধর্ষক হয় তবে আর কাকে দোষ দেওয়া যাবে? এ যেন এক ঘন ঘোর অন্ধকারের পাল্লায় পড়েছে আমাদের নিবু নিবু করে জ্বলতে থাকা সভ্যতার সলতেটুকু।
এ ব্যপারে (যান বাহনে ধর্ষণ) গত ৩১ জুলাই দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক তথ্যে জানা যায়, ২০১৫ সালের মে মাসে কর্মক্ষেত্র থেকে ঘরে ফেরার পথে রাজধানীতে গণ-ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গারো তরুনী (২২)। কুড়িল বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে ধর্ষণ করে একদল দুর্বৃত্ত। গাড়ীতে তুলেই তার মুখ ও হাত পা বেঁধে ফেলে দুর্বৃত্তের দল। অত:পর গাড়ীর ভিতরেই চালকসহ পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে তরুনীটিকে।
গত বছর ৫ জানুয়ারী গাভীর রাত্রে ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল চৌরাস্তায় একটি যাত্রীবাহী বাসের ভেতর ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটি বাদী হয়ে নান্দাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
গত বছর বরিশালের নথুল্লাবাদে সেবা পরিবহনের একটি বাসে কুয়াকাটা থেকে আসা দুই বোনকে ধর্ষণ করে গাড়ীর চালক ও তার সহকারীরা। পরে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের হলে আসামীরা গ্রেফতার হয়েছে সবাই বলে জানা গেছে।
২০১৩ সালে মানিকগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণের শিকার হন এক পোষাক শ্রমিক। ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী এ মামলায় চালক ও তাঁর সহকারী কাশেম আলীকে যাবজ্জীাবন কারাদন্ড দেন আদালত। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ মামলায় এক আসামী কারাগারে থাকলেও দিপু মিয়া এক বছর যাবত জামিনে মুক্ত থেকে দিব্যি বাস চালাচ্ছে।
গত ২ আগস্ট নারায়গঞ্জে মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে চলন্ত ট্রাকে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে ট্রাকের চালক ও হেলপার।
আবার ২০১৫ সালের মে মাসে গাজীপুরের কালীগঞ্জে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের এক নারী শ্রমিক নৌকায় ধর্ষণের শিকার হয়ে মামলা দায়ের করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে রাত ৮টার দিকে মেয়েটি নিজ বাড়ী কালীগঞ্জের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের একটি নৌকায় ওঠেন। নৌকাটি শীতলক্ষ্যা নদীর ফকিরবাড়ী ঘাটে পৌঁছালে সব শ্রমিক নেমে যান। এর পর নৌকায় দুই মাঝি কৌশলে মেয়েটির মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে। পরে তারা মুঠোফোনে একই নৌকার অপর দুই মাঝিকে ডেকে আসলে তারাও তাকে ধর্ষণ করে। বর্বরতার সীমা-পরিসীমা নেই যেন।
উপরের ধর্ষণের সংখ্যার ব্যাপারে কতিপয় মাস ও বছর ওয়ারী যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত। পুলিশ শুধুমাত্র সেই তথ্যই দেয়-যে তথ্য বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত মামলায় রেকর্ড থেকে সংগৃহীত। কিন্তু মামলা হয় ধর্ষণের ক্ষেত্রে কয়টি ঘটনার? তেমন কিছু একটা ঘটলেই ধর্ষক পক্ষ দ্রুত গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে মেয়ে বা তার অভিভাবকদের উপর নির্মম চাপ প্রয়োগ করে প্রথমে কথা আদায় করে যাতে পুলিশের কাছে মামলা না দেওয়া হয়। অত:পর তথাকথিত সমাজপতি ও আলেম ওলেমা মিলে নানা বিশ্লেষণের পর বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে মেয়েকে দায়ী করে থাকে এবং তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ফতোয়া দিয়ে বহু ক্ষেত্রেই ধর্ষিতা মেয়েটিকে আত্মহননের পথে ঠেলে দিয়ে থাকে। আর সামান্য কিছু ক্ষেত্রে ধর্ষকের নামমাত্র জরিমানা করা হয় মাত্র।
এর বাইরে বিপুল সংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা কখনও আলোর মুখ দেখার সুযোগ পায় না। লোক লজ্জার ভয়ে অথবা ছেলে পক্ষের দেনাপাওনার ভয়ে বা পুলিশের টাকার দাবী মেটানোর শক্তির অভাবে সেগুলি পোপনে চাপা পড়ে যায়। এভাবেই আমাদের সমাজে নারীরা অহরহ নিষ্পৃহীত নির্য্যাতীত হচ্ছেন। আর আমরা দিব্যি উন্নয়নের বয়ান গাইছি। উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে তা ধিন তা ধিন করে নেচে দুনিয়া মাতাস্থি ঘরে ঘরে কান্নার বোলকে উপেক্ষা করে।
আস্থা, আমরা বিগত পাঁচ বা দশ বছরে কত হাজার মামলা পুলিশের খাতায় রেকর্ড হয়েছে চাইলেনই সে তথ্য সবিস্তারে হয়তো পেতে পারি। কতগুলি মামলার তদন্ত শেষ হওয়ার পর বিচার কার্য্য শেষ হয়েছে সে তথ্য কিন্তু কেউ খোঁজ করি না। এ পর্য্যায়ে আদালতে দুই ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে। এক বিচার শেষে আসামীদের কঠোর শাস্তি এবং দুই আসামীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে তারা বেকসুর খালাস। তাই এই দুটি তথ্য পেলে হয়তো আমরা আরও আঁতকে উঠবো কারণ দেখা যেতে পারে হয়তো যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ্অপরাধীরা খালাস পেয়ে গেছে সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায়। সে ক্ষেত্রে ধর্ষিতাদের অবস্থা কেমন দাঁড়ায়? নতুন করে তাদের জীবনের ঝুঁকি বেড়েই যায় মাত্র।
এটা বলছি এ কারণে যে ধর্ষণের ক্ষেত্রে, গণ-ধর্ষণ ব্যতিরেকে, আদৌ কোন সাক্ষী তো থাকে না-বিশেষ করে প্রত্যক্ষ দর্শীর সাক্ষী। দ্বিতীয়ত: আমাদের সাক্ষ্য আইনটাও কিন্তু ধর্ষিতা নারীর অনুকূলে কতটা তরও নতুন করে ভাবাটা অত্যন্ত জরুরী। কারণ কাঠগড়ায় ধর্ষিতা দাঁড়িয়ে যখন ঘটনার বর্ণনা দেন তখন অপর পক্ষ তাঁকে যে ভাবে জেরা করেন যেমন –
তখন তোমার পোষাক কি ছিল?
কার সাথে কোথায় যাচ্ছিলে?
এই ছেলেকে চিনলে কি ভাবে?
তাকে তো অনেক দিন থেকেই ভালবাস?
আসলে কি ঢ়বহবঃৎধঃরড়হ হয়েছিল?
তুমি তো বাধা দাও নি………….
ইত্যাদি প্রশ্নে জর্জরিত যখন করা হয় যখন ধর্ষিতাকে দুশ্চরিত্রা বলে প্রমাণের চেষ্টা হয় তখন ধর্ষিতা অনেক সময় রাগে ক্রোধে আবোল তাবোলও বলে ফেলেন। হাকিম সেগুলি রেকর্ড করলে অনেক ক্ষেত্রে তা ধর্ষিতার প্রতিকূলেও যেতে পারে।
তাই ধর্ষিতার জবানবন্ধীকে আস্থায় নিয়ে ওইটার ভিত্তিতেই মূলত: বিচার হলে পরিস্থিতির অনেকটা পরিবর্তন হতে পারে মামলা দায়েরও অর্থবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে এবং এমন ঘটনাও যথেষ্ট হ্রাস পেতে পারে। তা ছাড়াও মামলা দায়েরের তিন মাসের মধ্যে চার্জশীট প্রদান এবং অত:পর চার মাসের মধ্যে বিচার কাজ সমাপন বাধ্যতামূলকও করা প্রয়োজন যাতে বিচার কাজ দ্রুত সমাধা হতে পারে । কারণ বিলম্ব ঘটলে সাক্ষ্য প্রমাণও অনেক সময় বিগড়ে ফেলা যেতে পারে, অপর পক্ষে চাপে বা প্রলোভনে।
এত কথা বললাম রূপাকে নিয়ে লিখতে বসে। তাই রূপাতেই ফিরে আসা যাক।
তার ছোট, বোনটি ও তার রূগ্না মা আজও শোকে মুহ্যমান। শোকাত গোটা বাঙালি জাতি। ক্রিকেটে অষ্ট্রেলিয়া বিজয়ের গৌরবোল্লাস, মিয়ানমারের, রোহিংগা নিধন জণিত বর্বর গণহত্যা, বন্যার্তদের হাহাকার এবং ঈদের আনান্দ ছাপিয়ে বাঙালি জাতির চোখে শুধই জল। সব কিছুই যেন নিরানন্দময়। যেন রূপাই নয় শুধু একাত্তরের মত ধর্ষিতা প্রতিদিনই হচ্ছে বাংলাদেশ।
উদ্বেগের অন্যতম কারণ রূপার ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত নিরপেক্ষ হবে তো? দ্রুত সম্পন্ন হবে তো? তাড়াতারি নিখুঁত একটি চার্জশীট আদালতে জমা দেওয়া হবে তো? চার্জ গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে না তো? সাক্ষ্য প্রমাণ নষ্ট করে ফেলা হবে না তো? অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পাবে তো?
এমনই হাজারো প্রশ্ন ঘুরে ফিরে অনেকের মনকেই ভারাক্রান্ত করে তুলছে।
আরও একটি দু:জনক বিষয় হলে ইদানিংকার শত শত ধর্ষণের ঘটনায় দেখা যাচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ শ্রমিক লীগ-কৃষক লীগের লোকেরা জড়িত। এবং সে ক্ষেত্রে আইনী প্রক্রিয়া বিলম্বিতই হয় না শুধু সাক্ষ্য প্রমাণ বিনষ্ট করার মাধ্যমে আসামীদের অপরাধ প্রমাণও অসাধ্য বা দু:সাধ্য হয়ে পড়ায় তাদের গায়ে কাঁটার আচড়টুকুও লাগে না। অত:পর রূপা এবং অন্যান্য ধর্ষিতাদের মামলায় তেমনটি যেন না হয়।


কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


  • প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!