সেলিনা জাহান প্রিয়ার গল্প: ‘হঠাৎ বৃষ্টির কেয়া’

 

হঠাৎ বৃষ্টির কেয়া

—————–  সেলিনা জাহান প্রিয়া

 

এক সাথেই একেই টেবিলে লিয়ন আর কেয়া কাজ করে । কেয়া তার মেধা সততা দিয়ে খুব ভাল ভাবেই কাজ করে যাচ্ছে । একদিন কেয়ার সাথে কোম্পানির মালিকের ছোট ভাই লিয়ন কে কাজ কাজ করতে দেয়। লিয়নের সাথে পরিচয়ের পর থেকেই লিয়ন কেয়ার সুন্দর চেয়ারা আর শান্ত ভাব দেখে মনে মনে পছন্দ করে ফেলে । কেয়ার প্রতিটা কাজ খুব গুছালো । সময়ের কাজ সময় মত শেষ করা । কোম্পানির সব দিক দিয়ে খেয়াল রাখা।

কাজের মধ্য জেন কেয়া বাচতে চায়। লিয়ন কাজ শেখার পাশাপাশি অনেক সময় ধমক ও দেয়। একদিন কম্পিউটার একটা কাজ ভুল করায় কেয়া খুব রেগে যায়। লিয়ন কেয়ার হাত ধরে সরি বলে। আসলে কেয়ার হাত ধরার জন্য এটা একটা বাহানা করে। অফিসের সবাই কেয়া কে খুব ভয় পায় কারন তার কাজ সচ্ছ ও সুন্দর। মিটিং এ প্রতিটা বিষয় কেয়া চমৎকার ভাবে বিশ্লেষণ করে। কেয়া বুঝতে পারে যে তার প্রতি লিয়ন দিন দিন একটু দুর্বল হচ্ছে। একদিন কেয়া বলল
——-লিয়ন সীমা অতিক্রম করা ঠিক না।
—– নিয়ন আজ আবার হাত ধরে বলল কেয়া আমি আপনাকে ভালবাসি।
—– না লিয়ন এটা ঠিক না। কাউকে পছন্দ হলেই সেটা ভালবাসা না।
—- আমি কোন কথা শুনব না। আমি তোমাকে ভালবাসি কেয়া।
—– তাহলে কি লিয়ন তুমি চাও আমি চাকুরি ছেড়ে দেই।
—– চাকুরি ছাড়লেই কি লিয়ন তোমাকে ছেড়ে যাবে।
—– আজ কোন কথা নেই।
—- লিয়ন বলল অফিস শেষ করে রাইফেল স্কয়ার আসবে আমি কেয়া তোমার জন্য অপেক্ষা করব। কেয়া কোন কথা না বলে চুপচাপ নিজের টেবিলে কাজ করছে। এম ডি আসা মাত্র তার রুমে প্রবেশ করে। লিয়ন ভাবছে সে হয়ত বিষয়টা তার ভাইকে বলবে। লিয়ন তাড়াতাড়ি তার ভাইয়ের রুমে প্রবেশ করে কিন্তু কেয়া বলছে এম ডি স্যারকে। লিয়ন স্যার সব কাজ শিখে গেছে। আর আমার কিছুই শিখানোর নেই। লিয়ন একটু ভয় পেয়েছিল। এখন শান্ত হতেই এম ডি বলল- লিয়ন তুমি আমাদের কার্গো সাইড টা দেখ আজ এই বিষয়ে তোমাকে চিঠি দেয়া হবে। কেয়া কিছুটা হালকা।
লিয়ন অনেক অপেক্ষা করে এক সময় চলে আসলো। কেয়া দেখা করতে আসে নাই। বেশ কয়দিন কেয়া কে লিয়ন বুঝাতে চেষ্টা করছে কিন্তু কেয়া তার কোন উত্তর দিচ্ছে না। লিয়ন অনেক চেষ্টা করে ব্যাথ হয়। কিন্তু হাল ছাড়ে না। কেয়া কে অফিসের একটা গাড়ি প্রতিদিন পল্লবী থেকে নিয়ে আসে এবং দিয়ে আসে। লিয়ন তালতালা থেকে গাড়িতে উঠে। এম ডি কেয়া কে ভুল বুঝতে থাকে। ভাবছে কেয়া তার ভাইকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছে। এম ডি কেয়ার বায়ও ডাটা ভাল করে আজ আবার দেখল। কারন গত তিন বছর আগে কি দেখেছিল মনে নাই। দেখল কেয়া বিবাহিত।
ভাইয়ের কথা চিন্তা করে কেয়া কে এম ডি সাহেব ডাকল। কেয়া বলল আসতে পারি স্যার। আমাকে ডেকেছেন?
— হ্যা কেয়া, বসুন। এই একটা কথা বলতে চাই। আমার ছোট ভাই নিলয় একটু আবেগ প্রবণ ছেলে। আমার বাবা নাই। আপনি বুদ্ধিমতী ও অনেক চালাক একজন মেয়ে। আমার কোম্পানির জন্য অনেক ভাল কাজ করেছেন। আমিও আপনাকে ভালই জানতাম এত দিন। কিন্তু আপনি বিবাহিত হয়ে আমার ভাইয়ের সাথে যা করছেন এটা ঠিক না। আমি আপনাকে চাকুরি হতে বাদ দিতে চাই না। আমি চাই আপনি রিজাইন দিয়ে আপনার সম্মান রক্ষা করুন।
— কেয়া বলল জি স্যার। ঠিক আছে। আমি এখন আসি।
— হ্যাঁ কেয়া তো রিজাইন দিচ্ছেন।
— জি স্যার আমি এখনেই রিজাইন করছি।
—- গুড। আমি আশা করব। আপনি আমার ভাইয়ের সাথে আর যোগাযোগ রাখবেন না।
—- কেয়া বলল জি স্যার আমার ভুল হয়েছে। সরি।
নিজের মত করে অফিসে রিজাইন দিল। সমস্ত অফিসের সবাই অবাক। কোন কথা না বলেই চলে গেল। লিয়ন ভাবতেই পারে নাই তার ভাই এমন কিছু করতে পারে। ভাইয়ের রুমে প্রবেশ করতেই লিয়নের বড় ভাই কেয়ার বায়ও ডাটা টা সামনে দিল লিয়নের। লিয়ন দেখে বলল হ্যাঁ ঠিক আছে তো ভাইয়া।
— কি ঠিক আছে কেয়া বিবাহিত?
— ভাইয়া কেয়া বিবাহিত এটা আমি জানতাম না।
— এখন তো জানলে। এই মেয়ে বিবাহিত হয়েও তোমার টাকা নষ্ট করছিল।
— কি বল ভাইয়া তুমি। গত এক বছরে আমি এই কোম্পানি থেকে যে টাকা নিয়েছি তুমি তার কোন হিসাব নিয়েছ। আর তুমি ভাবছ। আমি এই টাকা কেয়ার পিছনে খরচ করছি। ঠিক না ভাইয়া। কেয়ার সাথে বসে আমি ইন্টারনেট থেকে একটা লিঙ্কে কিছু ব্যবসা পেয়েছি। এই লিঙ্ক গুলো ও আমাকে শিখিয়েছে। আমি অল্পঅল্প জিনিস এখন রপ্তানি করছি। তাও কৃষি আইটেম। কেয়া কোন দিন আমার কোন কথা কোন দিন রাখে নাই। গত এক বছরে আমি ওর স্বামীর সাথেও কথা বলতে দেখি নাই। কোন সময় একটা ম্যাসেজ ও না। ফোন রেখে সে সারাক্ষণ কাজ নিয়ে পড়ে থাকত। আমি কেয়ার ফোনে ও ব্যবহারে তার বিয়ে হয়েছে এমন কোন কিছু দেখি নাই।
—লিয়ন আমি যা করেছি তোমার ভালর জন্য। আশা করি তুমি ঐ মেয়েটার সাথে মিশবে না।
— লিয়ন বলল ভাইয়া বিষয় টা আমাকে বলে করতে পারতে। কারন মেয়েটা একদিন আমার সাথে ভাল ব্যবহার করে নাই। যখন আমি তাকে প্রপোজ করি। লিয়ন কেয়া কে ফোন করে কিন্তু ফোন বন্ধু। মানে অফিসের সিম ছিল। লিয়ন বলে এই অল্প সময়ের মধ্য মেয়েটার ফোন পর্যন্ত বন্ধ করে দিলে।
— এম ডি বলল এই বিষয় নিয়ে এর কোন কথা বলতে চাই না।
লিয়ন কোন কথা না বলে অফিস থেকে বের হয়। বের হবার সময় কেয়ার ঠিকানা নিয়ে তার বাসায় আসে কিন্তু এই বাসা নাকি আরও দু বছর আগে ছেড়ে দিয়েছে। পল্লবী যেই জায়গা থেকে গাড়িতে উঠত সেই খানে এখন রোজ যায় কিন্তু কেয়ার কোন খবর নেই। অফিসের কেউ জানে না কিছুই। এই ব্যস্থ শহরে কোটি মানুষের ভিরে কেয়া কি হারিয়ে গেল। ফেইস বুক থেকে শুরু করে সব কিছুইতেই কেয়া নেই। কোম্পানি প্রতিটা কাজে অনেক ভুল হচ্ছে। কেউ কিছুই ঠিক মত করতে পারছে না। লিয়ন ও ভাইয়ের অফিস ছেড়ে নতুন একটা অফিস মতিঝিলে দিয়েছে।
লিয়ন এই কেয়ার দেখানো ব্যবসা করছে। এক কেয়া নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্য চরম ভুল বুঝা বুঝি। লিয়নের ভাই চিন্তা করে দেখল আসলেই কেয়া কে তার মতো কথা বলার সুযোগ দেয়া উচিৎ ছিল। এম ডি মিঃ মুরাদ মানে লিয়নের ভাই কেয়ার খুব কাছের একজন কে চিনত যার রেফারেন্স এ চাকুরীটা কেয়া পেয়েছিল। মিঃ মুরাদ মনে মনে কেয়ার খোঁজ নিতে সেই অফিসে গেল। ভদ্রলোক মিঃ মুরাদ কে দেখে বলল কি ব্যাপার আসুন। আপনার ছোট ভাই লিয়ন এসেছিল। মিঃ মুরাদ কেয়ার খোঁজ নিতে। আপনি কি মনে করে।
— একটু হেসে বলল আমার ছোট ভাই কি বলল।
—- বলল কেয়া কে অনেক দরকার। একটু ভুল হয়েছে!!
—- আসলে একটু ভুল না। মেয়েটা কে নিজের বোনের মত দেখিছি। কিন্তু একটা ব্যাপার ভাল ভাবে চিন্তা না করে আমি একটা ভুল কাজ করেছি। তাছাড়া কোম্পানির অনেক কিছুই কেয়া দেখত। সেই সব কাজে ঝামেলা হচ্ছে।
—- দেখুন মিঃ মুরাদ । জানি না আপনাদের কি ভুল। কেয়া কিন্তু টাকার জন্য চাকুরি করত না। ও আমার খুব কাছের বন্ধুর ভাতিজী।
—- টাকার জন্য চাকুরি করত না। ঠিক মানে বুঝলাম না।
—- এই যে এত দিন চাকুরী করেছে কোন দিন বেতন চেয়ে নিয়েছে।
—– না নেই নাই।
—– কোন দিন টাকা বা বেতন কম, বা ধরুন বোনাস কিছু নিয়েছে।
—– না নেই নেই।
—– আপনার অফিসের সবার সাথে কথা বলে জানবেন যে সে সবাই কে বিভিন্ন সময় যে কোন বিষয় সাহায্য করত।
—– হ্যা এটা আমি জানি। আসলে ওর ব্যাপারে কিছু বলুন।
—– কেয়া আমাকে ফোন করে নিষেধ করেছে। তার পর ও বলি। কেয়ার বাবা একজন ধনি মানুষ। এবং বড় ব্যবসায়ী। দুই ভাই দুই বোন তারা। কেয়ার বাবা কেয়া কে বিয়ে দেয় তার বন্ধুর ছেলের সাথে। কেয়া ঐ ছেলে কে এর আগে চিনত না। বিয়ের দিন বাসর রাতে ছেলে অনেক মদপান করে। ছেলে তার বাবার ইচ্ছায় বিয়ে করে। কিন্তু মনে করে এই মেয়ে জন্য সব হয়েছে। বাসররাতে কেয়া নিজেই চলে আশে স্বামীকে হোটেলে রেখে । ছেলে পরের দিন চলে যায় বিদেশে। মানসিক ভাবে কেয়া খুব ভেঙ্গে পড়ে। তার কিছু দিন পড়ে শুধু সময় পাস করার জন্য আপনার ঐ খানে চাকুরি। আপনার ব্যবসার আজ যে বড় বড় কর্পোরেট ডিল আছে সব কেয়ার বাবার জন্য।
—- কেয়ার বাবা কে জানতে পারি।
—- হ্যা। মিঃ মুরাদ কিন্তু আপনার ভাই কে বলবেন না। কারন আপনার ভাই কে কেয়া পছন্দ করে না। আর সে অন্য কাউকে বিয়ে করবে না।
—- ইস কি যে বলেন। এত কিছু আমি কিছুই জানি না। গত তিন মাসে কোন অনেক ব্যবসা হচ্ছে না।অনেক ব্যবসা হাত ছাড়া। কেন কি করন তা বুঝে উঠতে পারছি না। তা কেয়ার বাবা কে তা তো বললেন না ?
কেয়ার বাবা নাম বলতেই মিঃ মুরাদ একে বারে চুপ হয়ে গেল। মুল ব্যবসা গত দু তিন বছর কেয়ার বাবার কোম্পানি থেকে আসছে। তারা যদি এই মুহূর্তে তাদের অর্ডার বাতিল করে সব শেষ। মিঃ মুরাদ খুব চিন্তায় পড়ে গেল। বাসায় এসে লিয়ন কে ফোন করে বলল- লিয়ন আমি দুঃখিত ভাই। কাউকে না জেনে রাগের মাথায় কিছু বলা ঠিক না। কেয়া কে কি পেলি?
— না ভাইয়া।।
— ঠিক আছে তুই কেয়া কে পছন্দ করিস?
— হ্যা ভাইয়া।
—- আমি চেষ্টা করছি দেখি। কাল সকালে আয় একসাথে এক অফিসে যাব। লিয়ন কে নিয়ে মুরাদ কেয়ার বাবার অফিসে গুলশান যায়। কিন্তু চার ঘণ্টা সোফায় বসা। লিয়ন বলে ভাইয়া এরা তো আমাদের অনেক কাজ দেয়। কোন সমস্যা। অনেক লোক বসা। চেয়ারম্যান কি দেখা করার সুযোগ দিবে। মুরাদ বলে যে কোন উপায়ে দেখা করতে হবে। এর মধ্য একজন কফি নিয়ে এসে কফি দিয়ে যায়। মুরাদ কিছু বলে না যে এটা কেয়ার বাবার অফিস। হটাৎ অফিসের লোক জন বসা থেকে দাড়িয়ে যায়। লিয়ন দেখে তার কেয়া কে দেখে সবাই দাড়িয়ে। কেয়া তার সামনে দিয়ে হেঁটে তার বাবার রুমে প্রবেশ করছে। সবাই তাকে সালাম দিচ্ছে। লিয়ন একজন কে বলে সবাই উনাকে সালাম দিলেন যে। লোকটি বলল এই কোম্পানির চেয়ারম্যানের মেয়ে। এবং ডাইরেক্টর। লিয়নের কিছু আর বুঝার বাকি রইল না। মুরাদ কে বলল ভাইয়া আমাদের জানার মাঝে অনেক ভুল থাকে। মুরাদের কাছে লিয়ন সব কিছু শুনে বলল ভাইয়া কেয়া অনেক বড় মনের মানুষ। এত অপমান করার পর কেয়া কিন্তু আমাদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক নষ্ট করে নাই। আমি কেয়ার সামনে দাড়াতে পারব না। তুমি দেখা কর আমি চলে গেলাম। লিয়ন কেয়ার বাবার অফিস থেকে বের হয়ে নিজের অফিসে চলে আসে। মিঃ মুরাদ কে দেখে কেয়া একটা সুন্দর হাসি দেয়। মুরাদ সরি বলতে গেলে কেয়া বলে স্যার আপনি অনেক ভাল মানুষ ভাইয়ের কথা চিন্তা করে যা ভেবেছেন ঠিক আছে । কিন্তু আপনার ভাই অনেক ভাল একটা ছেলে। মিঃ মুরাদ আর বলতে পারে না যে তার ভাই কেয়া কে খুব ভাল বাসে। কেয়া মিঃ মুরাদ কে বলে স্যার আমি একটু দেশের বাহিরে যাচ্ছি। আজ আসি। আব্বুর সাথে দেখা করে যাবেন কিন্তু।।
লিয়ন প্রতিদিন কেয়ার বাড়ির সামনে দাড়িয়ে থাকে সকাল ৯ টায় আর বিকাল ৬ টায়। লিয়ন জেনেছে পল্লবী তার খালার বাসায় থাকত এখন নজের বাসায় বনানী থাকে। কেয়া ছয় মাস পর বিদেশ থেকে আসে। বিদেশ যাওয়ার সময় যেমন লিয়ন কে দেখে যায় রাস্তায় আসার পর ও দেখে । কেয়া কোন কথা বলে না। কেয়ার বাসার কাছের লোক হিমু কিন্তু কেয়া কে সব সময় জানায় লিয়নের আসার কথা ও যাওয়ার কথা। ঠিক সময় আসবে ৩০ মিনিট দাঁড়াবে রাস্তার যে কোন পাশে যাতে কেয়ার বাড়ি দেখা যায়। প্রতিদিন দুবার। এক বছরে কেয়া কোন দিন ভালমন্দ কিছুই জিজ্ঞাসা করে নাই। কেয়ার সাথে স্বামীর সাথে শেষ পর্যন্ত কেয়ার ডিভোর্স হয়ে যায়। প্রতিদিন লিয়ন আসে কেয়া দেখে। কিন্তু কেয়া নীরব। লিয়ন জানে না কেয়া তাকে দেখে কি না।বছর ঘুরে শীত আসে, শীত যায় চলে বসন্ত এসেছে পাতা ঝরাতে গাছের আর ফুল ফুঁটাতে। বসস্তের আকাশ যেমন সুন্দর কেয়ার চোখের ভাষা কিছুটা বদল হয়েছে এই বসন্তে। আকাশ মেঘ করে বর্ষা চলে এসেছে। কেয়া বারান্দায় দাড়িয়ে দেখছে ছাতা নিয়ে লিয়ন দাড়িয়ে। অনেক দিন পড় কেয়া আজ লিয়নের ছাতা নিয়ে দাড়িয়ে থাকা নিয়ে একা একা হাসছে। কাজের মেয়ে হিমু এসে বলল আপা আকাশে মেঘ ভিতর রবির কিরন। কেয়া হিমুর কান ধরে বলে দেখ ছাতা ওয়ালা।
— আমি রোজ দেখি আপা কিন্তু মনে হল আপনি আজ প্রথম দেখছেন। আমার জন্য যদি এমন করে কেউ একদিন দাঁড়াত পরের দিন হাত ধরে পালাতাম।
— কেয়া বলে মনে হয় তোর জন্য দাড়ায় রোজ হিমু।
—- হিমু বলে হ্যা আমার নাম কেয়া। সে কেয়ার জন্য পথিক।।
— কেয়া বলে হিমু একটা কাজ কর। তুই গিয়ে বল ভাই আর কতদিন!
— কেয়া আপু আমি আপনার মত পাথর না।
লিয়ন চলে যায়। পরের দিন বৃষ্টি নাই। লিয়ন এসে আবার দাড়ায়। আকাশ কালো করে মেঘ করে। হটাৎ একটু একটু করে বৃষ্টি শুরু হয়। লিয়ন দাড়িয়ে আছে। কেয়া হিমু কে ডেকে বলে তাড়াতাড়ি ছাতা নিয়ে আয়। হিমু ছাতা নিয়ে আসে। কেয়া বলে যা দিয়ে আয় ভিজে যাবে। কেয়ার মা পিছন থেকে বলে মা কেয়া ছাতাটা তোমার নিয়ে যাওয়া উচিৎ।। মায়ের মুখে আজ কেয়া এই কথাটা শুনে বুঝতে পারলো যে মা বিষয়টা জানে। বৃষ্টি পড়ছে। আনমনে লিয়ন রাস্তার দিকে চেয়ে আছে। পিছন থেকে একটা ছাতা লিয়নের মাথার উপর ধরে। লিয়ন ভাবে হয়ত কোন পথচারি। বৃষ্টি বাড়তে থাকে। কেয়া ছাতা ধরে দাড়িয়ে থাকে। লিয়ন পিছন ফিরে দেখে কেয়া দাড়িয়ে মাথার উপর ছাতা ধরে। দুই জন চুপ করে থাকে। লিয়নের চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। কেয়া তার ওড়না দিয়ে লিয়নের চোখ মুছে দেয়। লিয়ন কেয়ার হাত ধরে। কেয়া আজ কিছুই বলে না। লিয়ন বুঝে যায় আজ তার ভালবাসা আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়ে ঝরছে। একটা ঝড় হাওয়া ছাতাটা বাতাসে নিয়ে যায়। কেয়ার মা দূর থেকে কেয়া কে হাসি মুখে বাসায় ডাকে। হিমু বারান্দায় দাড়িয়ে হাসছে। কেয়া লিয়নের হাত ধরে লিয়ন কে বৃষ্টির মধ্যে কেয়ার বাসার মধ্যে নিয়ে যায়।
কেয়ার মা একটা তোয়ালে নিয়ে লিয়নের হাতে দেয়………কেয়া লিয়নের কানে কানে বলে দেখছ শাশুড়িরা মেয়ের জামাই কে কত আদর করে । লিয়ন একটু হাসে……।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!