আমেজ নেই লতিফ সিদ্দিকীর আসনের উপ-নির্বাচনে

 

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী, টাঙ্গাইলবিশেষ প্রতিনিধি  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম

আগামী ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাথী ছাড়া তেমন কোন শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আমেজহীন হয়ে পড়েছে এই উপ-নির্বাচন। ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীই নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। তবে নির্বাচনে যদি কাদের সিদ্দিকী থাকতেন তা হলে নির্বাচনে অন্যরকম আমেজ থাকতো। ভোটের লড়াইটাও হতো হাড্ডাহাড্ডি। আর নির্বাচনে অন্য যে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন তাদের বাড়ি কালিহাতীতে নয়। বলা চলে তারা এখানে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে চিনেন না ভোটাররা। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বাড়ি কালিহাতীতে। তিনি আগে থেকেই রাজনীতি করে আসছেন। স্থানীয়রা তাকে ভালো করেই চিনে। তাই হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর ভোটের পাল্লাটাই ভারী। সরেজমিনে ভোটার ও স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা যায়।

কালিহাতী সদরের দক্ষিণ বেতডোবা মোড়ে কথা হয় দলিল লেখক রফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই আমি শুনলাম আগামী ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই নির্বাচনে কোন আমেজ নেই। নির্বাচনে সোহেল হাজারীর প্রতিদ্বন্দ্বী যে দুই প্রার্থী আছেন আমরা তাকে কখনো দেখিও নাই, চিনিও না। তাদের সর্ম্পকে আমাদের কোন ধারণা নেই। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে আমরা চিনি। তিনি আগে থেকেই রাজনীতি করে আসছেন। ধরতে গেলে এই উপনির্বাচন একতরফা হবে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীই নির্বাচনে জয়লাভ করবেন।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ১৪ মাস নির্বাচন না হওয়ায় অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। আটকে রয়েছে এমপি কোটার অনেক উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ। নির্বাচনে যেই জয়লাভ করুক না কেন ওই বিজয়ী প্রার্থী যেন উপজেলায় উন্নয়ন কাজ করেন।

নির্বাচনে কারচুপি হওয়ার শঙ্কা নেই বলে তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন একতরফা হচ্ছে সেহেতু নির্বাচনে কোন প্রার্থীই কারচুপি করবেন না। তবে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে ভোটার সংখ্যা কম হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় মগড়া গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণু পালের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনে যদি কাদের সিদ্দিকী বা বিএপির কোন প্রার্থী থাকতো তাহলে নির্বাচনের মোড় অন্যদিকে যেত। তখন নির্বাচনের লড়াই জমজমাট হতো এবং কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলতো না। তখন নির্বাচনে মাঠ উত্তাপ থাকতো। সরগরম থাকতো নির্বাচনী এলাকাগুলো।

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনুর সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কাদের সিদ্দিকী থাকলে নির্বাচন ‘কনটেস্ট’ হতো। কিন্তু কাদের সিদ্দিকী জয় লাভ করতে পারতো না। আওয়ামী লীগ প্রার্থী যেভাবে প্রচার-প্রচারণা, সভা-সেমিনার ও পোষ্টার লাগাচ্ছেন, কিন্তু তার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আমরা এখন পর্যন্ত এসব কোন কিছু করতে দেখিনি। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে আছেন।

তিনি আরো বলেন, এই উপনির্বাচনের আসন শূণ্য থাকায় অনেক দিন ধরে কালিহাতীর এমপি কোটায় তেমন কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। আমরা খুশি আগামী ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আবারো কালিহাতী উন্নয়নের ধারায় ফিুরবে। যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি যেন দলমত নিবিশেষে সবাইকে নিয়ে এক সাথে কাজ করেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সেই সাথে কালিহাতীর সার্বিক উন্নয়ন চাই।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থী প্রতিন্দন্দ্বিতা করছেন। প্রতিন্দ¦ন্দ্বীরা হলেন, মোহাম্মদ হাসান ইমাম খান (সোহেল হাজারী) আওয়ামী লীগ, আতাউর রহমান খান (বিএনএফ) ও ইমরুল কায়েস (এনপিপি)। এই আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৭ হাজার ৭০০ জন।

জেলা নির্বাচন অফিসার এবং টাঙ্গাইল-৪ আসনের (কালিহাতী) উপ-নির্বাচনের সহকারী রিটানিং অফিসার তাজুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীরা বিধি অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি মধ্যে রাত থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়ে যাবে। কোন প্রার্থী যদি আচরণবিধি লঙ্গন করে প্রচার-প্রচারণা করেন তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!