ফখরুলসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুই মামলা

অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৫৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য এবং জনসভা শেষে পুলিশের কাজে বাধা ও নাশকতার অভিযোগ এনে রবিবার রাতে ও সোমবার বিকালে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা দুটি হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত রবিবার রাতে হাতিরঝিল থানার এসআই শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে মির্জা ফখরুল ছাড়াও মামলায় অভিযুক্তরা হলেনÑ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান,

নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি হাবিবুন নবী খান সোহেল, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে বিএনপি। সেখানে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সরকারবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। তাদের বক্তব্যের পর ওইদিন রাত ৮টার দিকে হাতিরঝিল থানার মগবাজার রেলগেট এলাকায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রশিবিরের ৭০ থেকে ৮০ নেতাকর্মী জড়ো হন। তারা রাস্তায় যান চলাচলে বাধা দেন। পুলিশ জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ না করতে অনুরোধ করে; কিন্তু পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করে তারা পুলিশকেই হত্যার উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। সেখানে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং একটি বাস ভাঙচুর করেন তারা। তবে আত্মরক্ষার্থে ভাঙচুর করা গাড়িগুলো দ্রুত চলে যাওয়ায় সেগুলোর নম্বর সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ। প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তারা লাঠি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মারধর শুরু করেন, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান।
মামলার এজাহারে উদ্ধারকৃত আলামত হিসেবে পাঁচটি বাঁশের লাঠি, দেড় লিটার পেট্রল, বিস্ফোরিত ককটেলের অংশবিশেষ ও ভাঙা কাচের টুকরা জব্দের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রবিবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির সাত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেনÑ কুমিল্লা জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া, বাড্ডা যুবদলের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার শফিউদ্দিন, গুলশান ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশেদ বিন সোলায়মান, ভালুকা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন, বাড্ডার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি সামছুল হক ও লাঙ্গলকোট থানা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব খন্দকার।
গ্রেপ্তার ওই সাতজনকে গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে (সিএমএম) হাজির করে হাতিরঝিল থানাপুলিশ সাতদিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতকে পুলিশ প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, নাশকতাকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে হাতিরঝিল থানার এএসআইসহ তিন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অভিন্ন অভিযোগ এনে গতকাল বিকালেও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় আরও একটি মামলা করে পুলিশ। নবগঠিত থানাটির ওসি ফজলুল করিম জানান, রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশে যাওয়ার পথে মগবাজার রেলগেট এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এ ছাড়া সমাবেশ থেকে নাশকতার উসকানিও ছড়ানো হয়। এসব অভিযোগে হাতিঝিল থানার পুলিশ বাদী হয়ে রবিবার ও সোমবার অর্ধশতাধিক নাশকতাকারীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!