রাতের সাইকো ভুত আর কবি

রাতের সাইকো ভুত আর কবি
– সেলিনা জাহান প্রিয়া

রাত আর কত কবি লেখতে লিখতে ঘড়ী দিকে তাকিয়ে দেখে মাত্র ২টা । দেয়াল ঘড়ী ভালই চলছে । কবির চা খেতে ইচ্ছা হল । এমন সময় কবির সামে ধুঁয়া উঠা গরম চা । কবি চা পেয়ে ভাবতে লাগলো না কফি হলে ভাল হত । কবির সামনে থেকে চায়ের কাপ নিয়ে চলে গেল এক মিনিটের মধ্যে আবার ধুঁয়া উঠা গরম কফি চলে আসলো । বিদ্যুৎ চলে গেল কিন্তু কবির আই পি এস থাকায় বুঝা গেল না । মাথার উপর ফ্যান চলতে লাগলো । হালকা বাতাসে জানালার কাপড় গুলো উড়তে লাগলো । কবি অফি শেষ করে কম্পিউটারের বেকাপ দেখছে আর কত মিনিট চলবে । এমন সময় বিদ্যুৎ চলে আসলো । কবি খুব খুশি । হাতের কফি শেষ । কফির মগটা নিয়ে গেল ।। কবির হটাৎ মনে হল আরে আজ তো বাসায় কাজের মেয়ে সিমা নেই । তাহলে তাকে কফি দিল কে ? তাহলে কি কবির স্বামী দিয়েছে ? কবি তার কম্পিউটার টেবিল থেকে উঠে দেখে স্বামী পুত্র কন্যা সবাই ঘুমে । কবি রান্না ঘরে যায় । দেখে এক কা পচা আছে । এখনো হালকা গরম । কবি মনে মনে ভাবে এটা তার স্বামী তার সাথে মজা করছে । কফি বানিয়ে দিয়ে নিজের মতো করে আবার ঘুমিয়ে গেছে ।
কবি আবার কম্পিউটারের সামনে এসে বসে ।

সাইকো ভুত একটা ম্যাসেজ দেয় কবি কে ।। কবি কে মাঝে মাঝে সাইকো ভুত ম্যাসেজ দেয় । কবি তেমন কারো ম্যাসেজ পড়ে না।
কিন্তু আজ কি মনে করে আজ ম্যাসেজ দেখলো । সাইকো ভুত লেখল – প্রিয় কবি আপনাকে কফি বানিয়ে খাওয়াতে পাড়লাম বলে আমি খুবেই আনন্দিত । আপনার রান্না ঘরে সব কিছু খুজে পেতে আমার কষ্ট হয় নাই ।
চা চাইলেন ঠিক আছে আবার কফি চাইলেন । সমস্যায় পড়ে গেলাম । কিন্তু কফি বাতাতে গিয়ে দেখি আপনার কফি দারুন । আমাকে মুগ্ধ করেছে । কবি আপনার ফ্রিজে খুলে দেখি – দারুন পায়েস । পায়েসের গন্ধ আমাকে নতুন করে মুগ্ধ করেছে । তাই আপনাকে না বলেই অর্ধেক খেয়ে নিলাম । আর দরজা বন্ধ করে ঘুমাবেন । ফ্ল্যাট বাসা বলে দরজা নিয়ে এত বেখেয়ালি হলে চলে না।
কবি কম্পিউটারের সামনে থেকে লাফ দিয়ে উঠে দ্রজার কাছে যায় । হ্যাঁ দরজা খোলা । কবি দরজা লক করে । ফ্রিজ খুলে দেখে পায়েস অর্ধেক নাই ।
কবি ভয়ে ঘামতে থাকে । কম্পিউটার লাইট আর ফ্যান বন্ধ না করে । স্বামীর পাশে চুপ করে গিয়ে শুয়ে পড়ে ।। কবি স্বামীকে জড়িয়ে ধরে । স্বামীর ঘুম ভেঙে যায় । দেখে কবি ঘামছে । স্বামী বলল কি হয়েছে তোমার ? কবি বলে জান এই বাসায় আজ ভুত এসেছিল ।। কবি স্বামী কে তার আজকের গঠনা গুলো বলে । স্বামী বলে তুমি আসলে রাত জাগতে জাগতে নিজেই সাইকো হয়ে গেছ । স্বামী উঠে কম্পিউটার লাইট ফ্যান । জানালা বন্ধ করে ।।
কবি ভয়ে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় ।
কবির ঘুম ভাঙ্গে খুব সকালে । রান্না ঘরে চায়ের কাপ । ফ্রিজের পায়েস আর কফির গ্লাস দেখে খুবেই চিন্তায় পড়ে যায় ।
কম্পিউটার অন করে । কাজের মেয়ে দরজায় কলিং বেইল বাজায় । স্বামী দরজা খুলে দেয় । কবি সাইকো ভুতের ম্যাসেজ আবার দেখে । খুবি ভয় পায় কবি । ম্যাসেজার থেকে সাইকো ভুতের কল । কবি তো অবাক আবার ভুতে কল দেয় । কবি জানে এখন দিনের বেলা । স্বামী বাসায় । ভুত কি করে তার বাসায় আসলো । আবার চলে গেল । ভাবনা আর ভয় নিয়ে ম্যাসেঞ্জারের সাইকো ভুতের কল রিসিভ করে ।
সাইকো ভুত হালকা সুরে বলে কবি একটা চা হবে – আমার টাই টা পাচ্ছি না। কবির আর বুঝতে বাকি রইলো না- এটা তার স্বামী –
একটা চিৎকার দিয়ে বলল আমাকে তুমি এই ভাবে ভয় দেখাতে পার ।।
স্বামী হেসে বলল যাই হউক ভুতের ভয়ে স্বামীর কাছে বাহুতে পালাতে পার এর আগে আমার বিশ্বাস হয় নাই ।।
দুই জন এক সাথে হেসে দিল । কবি বলল আসলেই সাইকো ভিত তুমি । ইচ্ছা করলে কাল তুমি আমাকে আরও ভয় দেখাতে পারতে ।
স্বামী বলল দরজা খুলে আমি রেখেছি ।। এত আনমনে থাকলে কবি দেখ সত্য একদিন ভুত আসবে ।।
কবি হাসতে হাসতে বলে ভুতের ঘরে কোন দিন ভুত আসে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!