হেল্‌থ ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম

শরীর থেকে টানা ৬ দিন ফুসফুস দু’টিকে বের করে রেখেই এক মহিলাকে বাঁচিয়ে দিলেন ডাক্তাররা! ঘটিয়ে ফেললেন এক অভূতপূর্ব ঘটনা!

সদ্য মা হওয়া ৩২ বছর বয়সী মহিলা মেলিসা বেনয়েট ফুসফুসের ভয়ঙ্কর সংক্রমণ নিয়ে এসেছিলেন কানাডার টরেন্টো হাসপাতালে। যিনি জন্ম থেকেই সিস্টিক ফাইব্রোসিসের রোগী। ডাক্তাররা তাঁকে প্রাথমিক পরীক্ষা করেই বুঝতে পারেন, কয়েক ঘণ্টার বেশি বাঁচবেন না মেলিসা। তাঁর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন।
অন্যতম সার্জেন ডা. শাফ কেশবজী বলেছেন, ‘‘রোগী যে ভয়ঙ্কর শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন, তাতে প্রতিস্থাপনের জন্য যে সময়টুকু লাগে, সেই সময়েও ওই ফুসফুসদু’টিকে শরীরে রাখলে রোগীর পক্ষে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যাওয়া কঠিন। ডাক্তাররা প্রাথমিক ভাবে চেষ্টা করেছিলেন, নানা রকমের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে রোগীর ওই বিকল হয়ে পড়া ফুসফুসদু’টিকে চালু রাখতে। কিন্তু পারেননি। কোনও অ্যান্টিবায়োটিকই ওই রোগীর বিকল হয়ে পড়া ফুসফুসদু’টি নিচ্ছিল না। তাঁর ফুসফুসে জমা ব্যাকটেরিয়াই ওই অ্যান্টিবায়োটিকগুলিকে কাজ করতে দিচ্ছিল না। তখন লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রেখে ওই রোগীর ফুসফুসদু’টিকে প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোনও পথ ডাক্তারদের সামনে খোলা ছিল না। আর তার জন্য রোগীর শরীরের তখন যা অবস্থা ছিল, তাতে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীরে ফুসফুসদু’টির প্রতিস্থাপন করাটাও সম্ভব ছিল না। তাঁর রক্তচাপ দ্রুত নামছিল। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলি এক এক করে বিকল হয়ে পড়ছিল। তাই রোগীর বিকল হয়ে পড়া ফুসফুসদু’টিকে তাঁর শরীর থেকে বের করে রেখে রোগীকে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে রাখাটা খুব জরুরি হয়ে পড়েছিল। না হলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হাত থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হতো না। তার পরেই ৯ ঘণ্টা ধরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয় ওই রোগীর। যিনি এখন দিব্যি সুস্থ।’’

ডাক্তাররা বলেছেন, ‘‘তাঁর জন্য এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না, যাঁর শরীর থেকে একই সঙ্গে দু’টি ফুসফুস নিয়ে নেওয়া যায়। সেটা হাতে আসার পরেই ঠিক ৬ দিন পর ওই রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়। আর সেই ৬ দিন ওই রোগীকে তাঁর বিকল হয়ে যাওয়া দু’টি ফুসফুস ছাড়াই কৃত্রিম ভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল।’’