সেলিনা জাহান প্রিয়ার গল্প: ‘অ-মানব’-(৫৪ তম পর্ব)

 

অ-মানব-৫৪-তম-পর্ব

———————-  সেলিনা জাহান প্রিয়া

 

রাত থেকে টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ছে । খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে আছিয়া বেগম । কোন ভাবে হাত মুখ ধুয়ে কবিরাজের বাড়ি যাওয়ার জন্য রওনা দিল । নদীর পাড়ে এসে বোরকা দিয়ে মুখ টা ভাল করে ঠেকে নিল । গ্রামের মানুষ খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ।

আছিয়া বেগম কে কিন্তু মাঝি চিনে না। যেহেতু তার মুখ ঢাকা । মাঝি এক জন কে বলছে ।  করিম চাচা বাজারে নাকি একটা মানুষ আসছে খুবেই রহস্যময় ? করিম চাচা বলল রহস্য তেমন কিছু না। মানুষ টা একটু আজব কিসিমের । কারো সাথে বেশী কথা বলে না। মুখ ভর্তি দাড়ি । গাঁয়ের রং বিলাতী সাহেবের মতো । তবে যাই হউক মানুষ টারে আমার খুব ভাল লেগেছে । মাঝি বলল তুমি কি তার সাথে কথা বলেছ । করিম চাচা বলল আরে না । বাজারে মোহন মিয়ারে খুব বোকা বানিয়ে দিয়েছে । আমি ফ্রি মিষ্টি খেয়েছি । মাঝি বলল আমার কাছে তার কাজটা খুব ভাল লেগেছে । করিম চাচা বলল আমার ও ভাল লেগেছে । আমার মেয়ে কে তো মালেক মিয়ার লঞ্চে উঠতে না করে দিয়েছি । গত কাল কোন যাত্রী পাই নাই । যারা জানেনা না।তারা ভুল করে উঠেছে । আজ তো তার লঞ্চ চলবে না। লঞ্চের সারেং চাকুরী ছেড়ে দিয়েছে । মাঝি বলল করিম চাচা আমি আমার নৌকায় মালেক মিয়ারে কোন দিন আর তুলব না। মালেক মিয়ার টাকা পয়সার অভাব নাই । একটা মাকে তার কাছে রাখতে পারলো না।আমার কাছে বউ বড় না কি মা বড় । মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত আর সেই মাকে রাখে বৃদ্ধা আশ্রমে । আমি নৌকা চালাতে পাড়ি এমন টাকায় ছেপ পালাই । করিম মিয়া বলল আমার মামত ভাই মালেক মিয়ার বাড়িতে গরুর দুধ দিত । আমি আজ আজানের সময় তারে না করে দিয়েছি । আমি বলেছি তুই যদি তোর মাকে ভালবেসে থাকিস তাহলে মালেক মিয়ার বাড়িতে দুধ দিবি না। আমার মামাত ভাই বলল যে মাকে টাকা পয়সা থাকা অবস্থায় বৃদ্ধা আশ্রমে দেয় তাঁকে আমি পানি পর্যন্ত দিব না। নৌকায় আরেক লোক বলে আমারা আছি ঐ মায়ের জন্য । আমি আজ দুপুরে আলফু মিয়া কে বলব একটা কমিটি করে চাদা তুলে দরকার হলে আমারা মালেক মিয়ার মাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসব । সারা গ্রাম মিলে আমারা সব মায়ের দেখা শুনা করব । আমাদের গ্রামে কোন মা যাবে না বৃদ্ধা আশ্রমে । নৌকার সবাই বলল তাই করব । মালেক মিয়ার সাথে কোন কথা নাই । মা বাবা নিয়ে কোন রাজনীতি নাই ।
মালেকের স্ত্রী আছিয়া বেগম নৌকায় বসে আর কোন কথা বলল না। নিজেই বোকা হয়ে গেল । মনে মনে বলে যদি মাঝি আমাকে ছিনে তাহলে নৌকা থেকে নামিয়ে দিবে ।
নৌকা ঘাটে আসলে টাকা দিয়ে চুপ করে নেমে যায় ।
কবিরাজের বাড়িতে অনেক মানুষ । সবাই পানি পড়া নিচ্ছে লাইন ধরে । কেউ কেউ বাচ্চা নিয়ে মাথায় ফু দিচ্ছে । মুখ থেকে বোরকার কাপড় সরিয়ে বলল চাচা সব কাজ খুব তাড়াতাড়ি শেষ করেন । কবিরাজ বলল মা জননী আপনি ঘরে গিয়ে বসেন আমি আসছি । কবিরাজের নাম খাজা মিছির আলি । অনেক বছর ভারতের আসামে আর দিল্লি আজমেরি থেকে যাদু বিদ্যা শিখে আসছে । মানুষ তাঁকে খুব বিশ্বাস করে । লম্বা পাঞ্জাবী পড়ে । মাথায় কালো কাপড়ের পাগড়ী পড়ে । চোখে সুরমা দেয়া থাকে আর গলায় আকিক পাথারের বেশ কয়টা মালা । বাবরী চুল আর হাতের আঙুল ভর্তি নানা জাতের পাথরের আংটি । মুখে পান লেগেই থাকে । কবিরাজ বাড়িতে খাবারের কোন অভাব নাই । ভক্তরা নানা খাবার নিয়ে আসে । টাকা পয়সা দিয়ে যায় । আছিয়ার মা এই কবিরাজের জন্য আছিয়া কে মালেক মিয়ার কাছে বিয়ে দিতে পারছে তাই বিশ্বাস করে । আছিয়া খুব মেনে চলে কবিরাজ কে । কবিরাজ খাজা মিছির আলি ঘরে এসে তার আসনে বসল । মাটিতে খুব সুন্দর একটা বিছানা । পাশের একটা লাল কাপড় দিয়ে পিতলের কলসি বাঁধা । পাশে জল চৌকিতে মোম বাতি জ্বালানো । মোম জলতে জলতে বিশাল হয়ে গেছে । কুল বালিসে হেলান দিয়ে কবিরাজ খাজা মিছির আলি বলল – মা জননী খুব পেরেশান মনে হচ্ছে ।
——– ঠিক বলছেন খাজা বাবা আমি খুবেই পেরেশানের মধ্যে আছি ।
——– আরে মা আমি থাকতে কোন চিন্তা করবা না। নাও মা আগে সকালের চা নাস্তা খেয়ে নাও । তার পড়ে খাজার কলসিতে একশত এক টাকা শিন্নি দিয়ে একটা মোম বাতি জালাও । কোন পেরেশানি নাই । যত মুশকিল তত আছান । মনে রেখ আমি হলাম এমন মানুষ । আমাকে দেখলে জীন ভুত পর্যন্ত পালিয়ে যায় ।
———– চা খেতে খেতে বলল বাবা জান যত টাকা লাগে আমি দিব । সারা গ্রামের মানুষ আমাদের বিপক্ষে চলে গেছে । বাজারে কোন জায়গা থেকে কোন এক পাগল আসছে । সে গ্রামের সব মানুষ কে যাদু করেছে । আমার স্বামীর সাথে বাজারের বা গ্রামের কোন মানুষ কোন কথা বলে না। গত কাল দুপুরে বৃষ্টি সময় তাঁকে কোন রিকসা ওয়ালা পর্যন্ত তাঁকে রিক্সায় নেয় নাই ।
————— শান্ত হও মা । নাস্থা কর । ভয় পেও না । আল্লাহ্‌ মানুষকে নানা ভাবে পরীক্ষা নেয় । তুমি আমাকে বাবা ডাক । আমার মেয়ের বিপদ মানে , আমার বিপদ ।
—————- আছিয়া নাস্থা শেষ করে কলসে টাকা ফেলে মোম জালায় । তার পড় বলতে থাকে । বাবা আমার শাশুড়ি কে আমার স্বামী গাজি পুর বৃদ্ধা আশ্রমে দিয়ে এসেছে । যেন ভাল থাকতে পাড়ে । সেই খানে ডাক্তার ফ্রি । কারেন্ট আছে । ফ্যানের বাতাস । টেলিভিশন দেখা যায় । আমার শাশুড়ি কত আরামে আছে । আর কোথা থেকে এক পাগল এসে বলল এটা নাকি মায়ের উপর অবিচার করা হচ্ছে । আর সেই পাগলের কথায় সারা গ্রাম এক হয়ে গেছে ।।
——————- খাজা মিছির আলি অনেক ক্ষণ চিন্তা করে বলল – মা জননী আপনি কি চান ? আমার জীন আমাকে বলল এই কাজ খুবেই কঠিন ।
——————— বাবাজি আপনি জানেন তো আমার শাশুড়ি একটা খুবেই বাজে মহিলা । সারা দিন কট কট করতে থাকে । সে আসলে তো সংসারের সব হিসাব নিতে চাইবে । আমার ছোট ভাই একটা জেলে । তার জেল থেকে বের করতে টাকা লাগে । আমি তো সব কিছু এই সংসার থেকে ম্যানেজ করি । শাশুড়ি আসলে আমার কোন কিছুই আর আমার থাকবে না। ছোট বোন টা ঢাকা থাকে লিখা পড়া করে তারে টাকা দিতে হয় । বড় ভাইয়ের ব্যবসা ভাল না তারে একটু দেখতে হয় । আমার শাশুড়ি আসলে তো আমার পক্ষে তাদের দেখা সম্ভব হবে না।
———————– খাজা মিছির আলি বলল মা জননী কোন চিন্তা কর না। বাজারের সব মানুষ আগের মতো হয়ে যাবে । ২১ দিন লাগবে । এই একুশ দিন মা জননী আপনে
নিরামিষ খাবেন । আর একুশটা নতুন কাপড় এক দামে কিনবেন । একটা গরু দেয়া লাগবে খাজার জন্য । আর মা জননী তিন মন চাউল লাগবে । আমি একটা শিন্নি রান্না করে সব জীনদের দাওয়াত দিব । তাদের বলল এই শিন্নি খেয়ে যেন তোমার কাজ করে দেয় । আসা করি অগ্নি বান আর লাঠি চালান দিব । যে পাগলে তোমার স্বামী আর তোমার বিপক্ষে কাজ করছে তার সারা শরীরে আগুন জ্বলতে থাকবে । আর লাঠি চালানের সাথে সাথে দেখবে আমি একটা লাঠি দিয়ে কলা গাছে বারি দেব । সেই বারি গিয়ে লাগবে সেই পাগলের শরীরে । তখন দেখবে বাপ বাপ বলতে বলতে সে বাজার ছাড়া গ্রাম ছাড়া হবে । আমার নাম খজা মিছির আলি কবিরাজ ।
————————- আছিয়া বলল বাবা আমি বার বার আসতে পাড়ব না। আপনি কাউকে পাঠিয়ে দিবেন । কত টাকা লাগবে হিসাব করে । আমি টাকা দিয়ে দিব । আপনি কিনে নবেন ।
———————– হিসাব মা আমি এখনি করে দিচ্ছি । কাজ বেশী দেরি কর না।
———————- না বাবা আমি দেরি করতে চাই না। হিসাব করে বলেন ? আর একটা মানুষ দিয়েদেন দরকার হলে আজকেই টাকা দিয়ে দিব । গরু তো আমার ঘরেই আছে । চাউল আর কাপড়ের দাম পাঠিয়ে দিচ্ছি ।
———————– ঠিক আছে মা। সব চেয়ে তাজা গরু দিবা । আর আপদত দশ হাজার টাকা দিয়ে দাও । কাল দিনটা ভাল আছে ।
———————— আচ্ছা বাবা জান আমার সাথে কাউকে দিয়ে দেন বলে খাজা মিছির আলি কবিরাজের বাড়ি থেকে বিদায় নেয় মালেক মিয়ার স্ত্রী আছিয়া বেগম ।
খাজা মিছির আলির বউ বলে এত কাপড় দিয়া কি করবেন ।
খাজা মিছির আলি হাসতে হাসতে বলে আল্লাহ্‌ দিছে । শুন বউ যার যত বড় বিপদ তার তো তত খরচ । খাজা মিছির আলির বউ পান দিয়ে বলে আজকের সকাল টা খুব ভাল গেল । মানুষ সব সময় পাঁচ দশ টাকা আর বেশী হলে ৫০০ টাকা দেয় । মাঝে মাঝে এমন বড় দু একটা কাজ হলে মনে খুশি লাগে । খাজা মিছির আলি বলে এই বার যদি এই কাজ করে ফেলি তাহলে কিন্তু আরও টাকা পাব । আমার নতুন পাঞ্জাবী টা দাও । দেখে আসি এই নতুন পাগল কে ?

অ-মানব খুব সকাল বেলায় নদীতে সাতার কেটে গোসল করছে । আলফু মিয়ার বউ খুবেই ভাল একজন মহিলা । আলফু মিয়া ডাকাতি করতে যেয়ে এই মহিলা কে দেখে সেই বাড়িতে আর ডাকাতি করে নাই । বাড়ির সবাই কে হাত পা বেঁধে ফেলে । কিন্তু সেই বাড়িতে তখন দেখে একটা মেয়ে তার হাতে আল কুরান নিয়ে দাঁড়িয়ে বলে ডাকাত দল আমাদের কাউকে জানে মের না। আমার হাতে আল্লাহর কিতাব । তোমরা যা চাও যদি এই বাড়িতে থাকে তাহলে আমি বের করে দিব । আলফু মিয়া কুপির আলোতে দেখে এক অপূর্ব মেয়ে । এক দেখাতে তার পছন্দ হয় । আলফু মিয়ার মুখ ঢাকা ছিল কাপড় দিয়ে । মুখ ঢাকা অবস্থায় বলে ঠিক আছে কাউকে মারব না । কিন্তু মেয়ে তুমি কথা দাও আমাকে বিয়ে করবে । মেয়েটা বলে সব কিছু আল্লাহ্‌ হাতে আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে আমি বিয়ে করব । আর তুমি যে দিন আসবে আমাকে নিতে আমি তোমার সাথে চলে যাব । তখন আলফু মিয়া বলে তোমাকে নিতে আসলে আমাকে কি ভাবে চিনবে । মেয়েটা তখন তার নাক ফুল খুলে আলফু মিয়া কে দেয় । বলে এই নাক ফুল নিয়ে যে আসবে আমি ভেবে নিব সেই আমার স্বামী । আলফু বলল তাই হবে আর তুমি যদি বিয়ে কর অন্য কাউকে তাহলে মনে কর আমি আর কোন দিন কুরান কে মানব না কেউ সামনে আনলে । সেই রাতে আলফু মিয়া আর তালুকদার বাড়িতে ডাকাতি না করে চলে যায় । তালুক দারের সেই মেয়ে অপেক্ষায় থাকে । সেই রাতে
তালুকদার বাড়ির সব মানুষ কে বুদ্ধি করে বাচিয়ে ফেলে । আলফু মিয়া সেই নাক ফুল তার মায়ের কাছে এনে দেয় । আলফু জেলে যায় জেল থেকে বের হয়ে তার মাকে পাঠায় নাক ফুল দিয়ে । সেই দিন পালকি করে আলফুর মায়ের সাথে এই বাড়িতে আসে । তার পড় বিয়ে হয় । আজ ৪০ বছর এই বাড়িতে আছে । আর কোন দিন তার বাপের বাড়িতে যায় নাই । তাঁকে কেউ কোন দিন নিতেও আসে নাই ।
অ-মানব সকালে নাস্তা করতে করতে বলল চাচা জান একটা কথা বলব ।
আলফু মিয়া বলল – বল বাবা অ-মানব শুনি ।
——————— আপনার বাড়ির পাশে নদীর পানি কোন দিন মন থেকে মুখে নিয়েছেন ।
———————- আরে বাবা এটা কোন কথা বললে । আমার বাড়ির পাশের নদীর পানি দিয়ে তো আমি প্রায় হাত মুখ ধুয়ে বাড়িতে আসি । তুমি আজ এই কথা বলছ কেন । কোন সমস্যা ।
আলফু মিয়ার স্ত্রী বলল – বাবা একটা কথা বলি । তুমি কাল অনেক রাতে এসেছ । তোমার চাচা বলল তুমি একটু পাগল কিছিমের মানুষ । বাবা এই নদীতে কত মানুষের দুঃখ কষ্ট বয়ে যায় । সবাই কি সেই দুঃখ কষ্ট আর নদীর ভাষা বুঝে । অ-মানব চুপ হয়ে গিয়ে বলল মা আমাকে মাপ করেন । আমি মনে হয় কোন ভুল করেছি । আলফু মিয়া বলল তোমাদের কথার কোন আগা মাথা পাই না। অ-মানব বলল চাচা দুনিয়ায় এমন কিছু আলো আছে টা সবাই দেখে না। আজ আমি আপনার ঘাটে গোসল করে কিছু আলো দেখতে পেলাম । আপনি জীবনে অনেক ভাগ্যবান । আর আমিও খুব ভাগ্যমান একটা অ-মানব মানুষ । এই কথা বলে বলল মা আপনার হাতে রুটি এত মজা । দুপুরে আমার জন্য যদি পারেন দুইটা রুটি দিয়েন ।
আলফুর স্ত্রী বলল আচ্ছা বাবা ছেলের জন্য পাঠাব , কোন অসুবিধা নাই ।
অ-মানব আর আলফু মিয়া বাজারে দিকে নৌকা করে রওনা দিল । নৌকায় বসে আলফু মিয়া বলল অ-মানব একটা কথা বলবা ।
———— কি কথা চাচা ।
———–আমার স্ত্রী কোন দিন এত রহস্য করে কথা বলে না। খুবেই কথা কম বলে । সারা দিন নামজ আর সংসার নিয়ে ব্যস্থ থাকে । কোন ফকির কে সে ফেরত দেয় না।
মানুষ জনের সাথে বেশী কথা বলে না কিন্তু মানুষ জন তার কাছে আসে কত কথা বলে । সবাই বলে তার কাছে কথা বললে নাকি দুঃখ কমে ।
————— অ-মানব হাসতে হাসতে বলল একটা মোম বাতি থেকে যদি জাহার জাহার মোম বাতি জ্বালান তাহলে যেই মোম থেকে আলো নিয়ে সব মোম জ্বলে উঠল সেই মোমের আলো কি কমবে ?
—————– না । কমবে না।
—————–এই যে আপনি ঝড়ের সময় না পালিয়ে দারগা কে বাচালেন । সেই দারগা আপনাকে ফাঁসি থেকে বাচালো । সেই সব কিছুর জন্য একটা কারন লাগে ।। আপনার সাথের সব ডাকাত মারা গেল আপনি কিন্তু ভাল আছেন । এই আপনি এত ভাল কেন হলেন একবার চিন্তা করুন ।
—————— হ্যা অ-মানব ঠিক বলেছে । আমার ফাঁসি হয়ে যেত । কেমনে কি করে যে সব ঠিক হল । মাঝে মাঝে তাই চিন্তা করি । আমার বয়স হয়েছে । কিন্তু বাবা আজ তোমাদের কথা কিছুই বুঝি নাই ।
অ-মানব বলল চাচা জান বুঝতে চান সে কথা । আমি যে দিন চলে যাব সেই দিন রাতে আপনি পানার নদীর ঘাটের একটু পানি মুখে দিবেন । তার পড় কেমন লাগলো
সেটা আপনার স্ত্রী কে বলবেন । মা জননী তখন বলে দিবে নদীর পানি কেন এমন লাগলো ।
আলফু মিয়া বলল আচ্ছা ঠিক আছে । নৌকা থেকে নামা মাত্রই মানুষ সালাম দিতে লাগলো । অ-মানব বাজারের সবার দিকে চেয়ে বলল জয় আমাদের খুবেই সামনে । একজন মায়ের জন্য আপনরা যা করছেন এক দিন আপনাদের মেয়েরা মা হবে । মনে রাখবেন আপনরা আজ যা করছেন মায়ের জন্য সেই ফল আপনাদের মেয়েরা পর্যন্ত লাভ করবে । এই কথা শুনে এক মাঝি নৌকা থেকে নেমে বলল ভাই আপনে মানুষটা চোখ খুলে দিলেন । আপনি চাচা জানের গদিতে জান আমি আপনার জন্য চা নিয়ে আসতেছি । শুধু বাজার না সারা গ্রামের মানুষ আপনার পক্ষে । আমরা ও আছি আপনার সাথে ।
আলফুর মিয়ার গতিতে বসে একটা পেপার পড়ছে অ-মানব । এমন সময় সোহরাব বলল আমি কিন্তু আদা দিয়ে চা নিয়ে এসেছি । অ-মানব চা হাতে নিতেই গতিতে এসে একটা লম্বা সালাম দিয়ে অ-মানবের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল— আমি হলাম গিয়ে । এমন সময় আলফু মিয়া বলল

চলমান———–

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!