ডিমলায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গাছে বেধে নির্যাতনের অভিযোগ

 

এস কে রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি  । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

শেফালী বেগম (৩২) নামের এক অন্তসত্তা নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শারিরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।

 নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশাচাঁপানী ইউয়নের বেশ কিছু আওয়ামী লীগ নেতা ও এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের বাইশপুকুর কোলন ঝাড় গ্রামের এই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রভাবশালী নেতারা দিনদুপুরে শেফালী বেগম গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মর্মে গরুসহ গাছে বেধে পুলিশকে সংবাদ দেয়। নির্যাতনকারীদের হুমকীর কারনে ওই গৃহবধু ডিমলা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হয়ে আজ শনিবার সকালে নীলফামারী জেলার বাহিরের এক হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারন নির্যাতনকারীরা তার অবস্থান জানান জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধু শেফালী বেগম (৩২) উক্ত গ্রামের লালন মিয়ার স্ত্রী ও একই গ্রামের হত্যার শিকার মবিয়ার রহমানের মেয়ে।
এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়-জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদে তার উপর এ নির্যাতন চালানো হয়।
এলাকায় কোন ঘটনা ঘটলেই শেফালী ও তার ভাইয়ের উপর নির্যাতনে খড়ক নেমে আসে।
তার দুই ছেলে মেয়ে ও তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শেফালীর স্বামী রিক্সা চালাতে ঢাকায় অবস্থান করছে। ঘটনার দিন গতকাল শুক্রবার (৪ আগষ্ট) সকাল ১০টার দিকে একই গ্রামে বসবাসকারী তার বড় বোন আকলিমা (৩৫) সঙ্গে তার স্বামী রফিকুল ইসলামের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ওই বচসা থামাতে যায় শেফালী বেগম। এ নিয়ে ধাক্কাধাক্কি হলে শেফালীর বড় বোনের স্বামী সামান্য আহত হয়। আর এ ঘটনাকে পূঁজি করে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামীরা গ্রাম্য মাতব্বরদের সহযোগীতায় শেফালীকে গরু চুরির মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে একটি গাছে বেধে ফেলে।
 শেফালীর শরীরে মারপিটের সময় ওই গৃহবধু নির্যাতনকারীদের বেশ কয়েকজনের হাতে কামড় দেয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা গরু ও মাদকসহ শেফালীকে ধরিয়ে দিতে ডিমলা থানা পুলিশকে খবর দেয়। এ জন্য শেফালীর বড় বোনের স্বামী রফিকুল ইসলামকে দিয়ে থানায় মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে লিখিত অভিযোগ করায়। ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ সর্দার ও চার নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ রশিদুল সর্দার বলেন ঘটনার দিন দুপুর ১২টা দিকে গৃহবধু শেফালীকে গাছে বেধে নির্যাতনের ঘটনা দেখতে পেয়ে ডিমলা থানায় অবগত করি এবং শেফালীর বাঁধন খুলি দেই। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের ও বিএনপি নেতা মজনুর রহমান মঞ্জুর নির্দেশে শেফালীকে গাছের সঙ্গে বেধে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এদিকে গোপনে চিকিৎসাধীনে থাকা গৃহবধু শেফালীর সঙ্গে কথা হয় সাংবাদিকদের। শেফালী জানায় – ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তানজিদার রহমান এসে হুমকী দেয় শেফালীকে হাসপাতালে ভর্তি করলে ফেন্সিডিল দিয়ে তকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেয়া হবে।  শনিবার ভোরে গ্রাম হতে বেরিয়ে জেলার বাহিরের একটি হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছি।
 খালিশাচাঁপানী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব হোসেন বলেন – এ ঘটনার সঙ্গে কোন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী জড়িত নয়।
খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তানজিদার রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন – শুনেছি ওই মহিলা নাকী ভাল নয়।
ডিমলা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন ওই মহিলার নামে গরু চুরি ও মানুষজনের হাতে কামড় দেয়ার অভিযোগ এসেছিল। কিন্তু ঘটনাটি তেমন কিছু নয়। এ বিষয়ে থানায় কোন মামলা হয়নি। দিনভর গাছে বেধে নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।
sk_news_2

  • কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!